বাসন্তী ও গোসাবা, ৮ জুলাই (হি. স.) :বাসন্তী ও গোসাবা মিলিয়ে মোট বুথের সংখ্যা ৫২৮ টা। কিন্তু এর মধ্যে ৫০ টির মত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও বাকি প্রায় পৌনে পাঁচশো বুথে ছিল না কেন্দ্রীয় বাহিনী। একজন মাত্র পুলিশ কর্মী মোতায়েন ছিলেন ভোট কেন্দ্রে। আর এই সব বুথের বেশির ভাগেই সকালের দিকে শান্তিতে ভোট হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বুথ দখল, ছাপ্পা হয় দেদার। কোথাও কোথাও ছাপ্পা ভোট রুখতে পুলিশ প্রশাসনকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেলেও বেশিরভাগ বুথে বিনা বাধায় ছাপ্পা দিল শাসকদল।
এদিন সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল বাসন্তীর কাঁঠালবেরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাঙনখালি, মন্ডলপাড়া, খেরিয়া, ডকঘাটের মত বুথগুলোতে। সেই কারনে এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এই এলাকায় একের পর এক বুথ ঘুরে বেড়ান। বুথ জ্যাম করতে আসা রাজনৈতিক দলের কর্মীদেরকে হটাতে লাঠিচার্জও করেন। বেশ কয়েকটি জায়গায় নির্দলরা তৃণমূলের ভুয়ো ক্যাম্প করে ভোটারদের প্রভাবিত করছিল, অভিযোগ পেয়ে সেই ক্যাম্পগুলি ভেঙে দেয় পুলিশ।
কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা বুথগুলিতে ছাপ্পা ভোট বা বুথ লুট করার মত ঘটনা না ঘটলেও বাসন্তীর ঝড়খালি, নফরগঞ্জ, ভরতগড়, রামচন্দ্রখালি, বাসন্তী, ফুলমালঞ্চ ও চুনাখালি এলাকায় বুথ দখল করে দেদার ছাপ্পা মারার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাসন্তী পঞ্চায়েতের কালিডাঙা জুনিয়ার হাইস্কুলের ১৯৮ নম্বর বুথে তৃণমূল কংরেসের প্রার্থী আরুফা খানের স্বামী কাদের খানের বিরুদ্ধে ভোটকক্ষে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করা এবং ছাপ্পা ভোট মারার অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে অন্যান্য গ্রামপঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে দেদার ছাপ্পা ভোট মারার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা।
পাশাপাশি গোসাবার শম্ভুনগর, রাঙ্গাবেলিয়া, কুমিরমারি, আমতলী, ছোটমোল্লাখালি, কচুখালি, বালি ১, বালি ২ সহ অন্যান্য গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সর্বত্র ছাপ্পা ভোট মারার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি ও আরএসপি। কুমিরমারিতে শুক্রবার রাত থেকেই বুথ দখল করে নেয় তৃণমূল। রাতেই ছাপ্পা মেরে ভোট পর্ব শেষ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গোসাবার জেলা পরিষদ প্রার্থী তথা বিজেপি নেতা সঞ্জয় নায়েক বলেন, “ বাসন্তী, গোসাবার সর্বত্র সন্ত্রাস করেছে শাসকদল। যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না, সেখানেই বুথ দখল করেছে, ছাপ্পা মেরেছে। গনতন্ত্রকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে এই তৃণমূল দল।” আরএসপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেন, “ ভোটের নামে প্রহশন হয়েছে। এই ভোটের কোন মানে হয় না। মনোনয়ন জমা পর্ব থেকেই শুরু হয়েছে সন্ত্রাস। ভোটের দিনও সেই সন্ত্রাস অব্যাহত। বেশিরভাগ বুথেই বেশিরভাগ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি শাসক দল। সকালের দিকে কিছু বুথে ভোট হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বুথ লুট করেছে তারা।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দক্ষিন ২৪ পরগনার তৃণমূলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়দেব হালদার। তিনি বলেন, “ এই অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ, প্রশাসন সকলের উদ্যোগে নির্বিঘ্নেই ভোট হয়েছে বেশিরভাগ এলাকায়। দু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া ভোট এখনও পর্যন্ত শান্তিতেই।”