পুরুলিয়া, ২৩ জুন (হি.স.): পুরুলিয়ার আদ্রায় দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর দেহরক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার আদ্রার পাণ্ডে বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পার্টি অফিসে যাঁকে গুলি করা হয়েছে, তিনি আদ্রা শহর তৃণমূলের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে তৃণমূলের দাবি। ওই ঘটনায় তলপেটে গুলি লেগেছে ধনঞ্জয়ের দেহরক্ষী শেখর দাসের। তাঁকে বাঁকুড়ার মেজিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় পার্টি অফিসের বারান্দায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বসেছিলেন ধনঞ্জয়। সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী শেখরও ছিলেন। সেই সময় আচমকাই দু’জন বাইকে করে পার্টি অফিসে এসে গুলি ছুড়তে শুরু করে আততায়ীরা। এর পর ঘটনাস্থলে মোটরবাইক ফেলেই সেখান থেকে পালায় আততায়ীরা। এই ঘটনার পর ধনঞ্জয় এবং শেখরকে রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ধনঞ্জয়ের মৃত্যু হয়েছে, শেখর হাসপাতালে ভর্তি।
এদিকে, আদ্রায় তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা এগিয়েছে। বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি করে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকা থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজও। জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হওয়া দু’জনকে গ্রেফতার করেছে আদ্রা থানা। ধৃতদের নাম আর্শাদ হোসেন এবং মহম্মদ জামাল।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, আর্শাদ বেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী।
এদিকে, বৃহস্পতিবারের সেই ঘটনায় শুক্রবার তীব্র ক্ষোভ দেখা গিয়েছে রেল শহর আদ্রায়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এদিন সকাল থেকে টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। তৃণমূলের তরফ থেকে আদ্রায় শুক্রবার অঘোষিত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শহর জুড়ে নেমেছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থলেও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গুলিকাণ্ডের পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি আদ্রায়। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, যে পার্টি অফিসে ধনঞ্জয়কে খুন করা হয়েছে, তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসি ক্যামেরা থেকে বেশ কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পার্টি অফিসের ভিতরেও একটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। যদিও সেটি বিকল। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, খুনের ঘটনার পর রাতেই স্নিফার ডগ এনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলার পুলিশ কর্তারা।
পুরুলিয়ায় তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেস অবাধ, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের ডাক দিয়ে, সহনশীলতার পরিচয় দিচ্ছে, এদিকে বিরোধীরা হালে পানি না পেয়ে, প্রার্থী দিতে না পেরে, তাঁদের সঙ্গে ভোটার নেই, ক্যাডার নেই, কোনও সমর্থন নেই। তাঁরা বাইরে থেকে গুন্ডা ভাড়া করে নিয়ে এসে, বেআইনি অস্ত্র মজুত করে নিয়ে এসে, তারা তৃণমূল কর্মীদের বেছে বেছে কীভাবে খুন করছে, সেটা আরও একবার দেখতে পেলেন।”

