নয়াদিল্লিতে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সভায় ত্রিপুরায় এনডিআরএফ’র ব্যাটেলিয়ন রাখার অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর

নয়াদিল্লি, ১৩ জুন (হি. স.) : ত্রিপুরা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার ৫ নম্বর জোনে অবস্থিত। তাই, বিপর্যয় মোকাবিলায় এনডিআরএর-র ব্যাটেলিয়ান রাখতে চাইছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা.) মানিক সাহা। সে মোতাবেক আজ নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় মোকাবিলায় ত্রিপুরায় এনডিআরএফ’র একটি ব্যাটেলিয়ন স্থায়ীভাবে রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই সভায় সভাপতিত্ব করেছেন। তাছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রিগণ এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার ৫ নম্বর জোনে ত্রিপুরা অবস্থিত হওয়ায় রাজ্যে ভূমিকম্প ও অন্যান্য বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ত্রিপুরা সরকার এই বিপর্যয় মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন্যা, খরা ও অন্যান্য দুর্যোগ সম্পর্কিত পর্যালোচনা সভাও করা হচ্ছে। ২০১৮ এবং ২০১৯-এর ভয়ানক বন্যার পর বড় ধরনের বিপর্যয় না ঘটলেও ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারি ও আধিকারিকদের বিপর্যয় লাঘব করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরায় গত এক বছরে  রাজ্যবাসীর কাছে ১২ কোটির বেশি কমন প্রোটোকল সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমের দ্বারাও সতর্কবার্তা জারি করা হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্টেট ডিজাস্টার মিটিগ্যাশন ফান্ড (এসডিএমএফ)-এর দ্রুত ব্যবহার করা দরকার। মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় লাঘব করার বিষয়ে ত্রিপুরা সরকারের আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
তাঁর বক্তব্য, ত্রিপুরায় মোট ৫৫২ জনকে নিয়ে স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স-এর (এসডিআরএফ) চারটি কোম্পানি তৈরি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪০৪ জনকে মৌলিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের প্রশিক্ষণের জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যারা মৌলিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন সেই সমস্ত এসডিআরএফ বাহিনীর সদস্যদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের সহায়তা প্রয়োজন।ত্রিপুরায় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে আরও শক্তিশালী করতে সরকার আরও ২০টি স্থায়ী পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাছাড়া নির্দেশিকা অনুযায়ী সেন্ডাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন প্রকল্পও রূপায়িত হচ্ছে ত্রিপুরায় ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মডেল ফায়ার বিল অনুসারে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ত্রিপুরা ফায়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি সার্ভিসেস অ্যাক্ট ২০২২ প্ৰণয়ন করেছে। ২০২১ সালের ১১ জুন ফায়ার অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ত্রিপুরার জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ১১৮ কোটি টাকা। কেন্দ্ৰীয় সরকারের বিপর্যয় সংক্রান্ত সমস্ত প্রকল্প রাজ্যে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এবং ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের পোর্টালও আপডেট করা হচ্ছে। বর্তমানে ত্রিপুরায় ১ হাজার জন প্রশিক্ষিত আপদা মিত্র রয়েছেন। রাজ্যের প্রতি ৫০ জন নাগরিকের জন্য কমপক্ষে ১ জন আপদা মিত্রের সংস্থান রাখতে এই কর্মসূচি জারি রাখা হবে। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপর্যয় মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামো উন্নয়ন ও উন্নত সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য এককালীন অনুদান দিয়ে একটি বিশেষ প্রকল্প রূপায়ণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।