কলকাতা, ১৯ মে (হি. স.) : গত ১ এপ্রিল জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারপার্সন অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷
মৃতদের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি করলেও, আদালত রাজ্য পুলিশের এডিজি হেডকোয়ার্টার কে জয়রামনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে৷ শুক্রবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ ২ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ৷ আর তদন্তে কী অগ্রগতি হল ২৯ জুন সে নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে সিটকে ৷
বিচারপতি মান্থা এ দিন সিটকে তদন্তভার দেওয়ার সময় মন্তব্য করেন, “মামলার চাপে ভারাক্রান্ত সিবিআই৷ তাই তদন্তে সঠিক দিশা দিতে আদালত রাজ্য পুলিশের দক্ষ আধিকারিককে মাথায় রেখে সিট গঠন করছে। যদিও, আদালত মানছে রাজ্য পুলিশের তদন্তে পরিবারের ভরসা নেই৷”
এই মামলার শুনানি করতে গিয়ে জলপাইগুড়ি পুলিশের ভূমিকায় একাধিক ত্রুটি আদালত পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ যদিও, সিবিআই-এর তরফে এ দিন আদালতে জানিয়েছিল, মাত্রাতিরিক্ত মামলার চাপ থাকলেও তারা তদন্তভার নিতে প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অপর্ণা ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের দেহ উদ্ধার হয় ৷ সঙ্গে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট ৷ সেখানে জলপাইগুড়ি পৌরসভার বর্তমান ভাইস চেয়ারপার্সন সৈকত চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ ঘোষ, মনোময় সরকার এবং সোনালি বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করেছিলেন তাঁরা ৷ প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে তৃণমূল নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেছিলেন তাঁরা ৷ এর আগেও তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন দম্পতি ৷
পুলিশের গাফিলতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই বিষয়টিও আজ উল্লেখ করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ ২০২২ সালের ৩ অক্টোবর পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখেছিলেন তাঁরা ৷ তারপরও পুলিশের তরফে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আর গত ১ এপ্রিল দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়।
এই ঘটনায় ভাইস চেয়ারপার্সন সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মৃত দম্পতির মেয়ে তানিয়া ভট্টাচার্য নানানভাবে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ করেন ৷ এমনকী তাঁকে পৌরসভায় চাকরির পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয় বলেও অভিযোগ ৷ উল্লেখ্য, মৃত সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি শিখা চট্টোপাধ্যায় বিজেপি বিধায়ক।