বাজারিছড়া (অসম), ১০ মে (হি.স.) : গত তিনদিনে দুই কোটি, ছয় লক্ষাধিক টাকার পর করিমগঞ্জ জেলার অসম-ত্রিপুরা আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী চুড়াইবাড়ি চেকগেটে এবার উদ্ধার হয়েছে আরও তিন কোটি টাকার নেশার কফ সিরাপ ফেন্সিডাইল। এর সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা কন্টেইনার চালক জিলানি শাহ, সহ-চালক আনাশ এবং জনৈক আবরাবকে।
করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত বাজারিছড়া থানাধীন চুড়াইবাড়ি ওয়াচ পোস্টের নবাগত ইনচার্জ প্রণব মিলি জানান, আজ বুধবার সকাল প্রায় ছয়টা নাগাদ পুলিশ নাকা পয়েন্ট গড়ে ত্রিপুরায় পাচারের মুখে ইউপি ২১ সিটি ৬৮৫৮ নম্বরের একটি কন্টেইনার (পণ্যবাহী লরি) আটক করে তাতে তালাশি চালান তাঁরা। দশ চাকার কনটেইনারে মূলত জেকে ডায়েরির প্যাকেটজাত দুধ বোঝাই ছিল। এক এক করে দুধের কার্টুনগুলি নামানোর পর তালাশি অভিযানকারী পুলিশ-দলের চোখ ছানাবড়া হওয়ার উপক্রম। দুধের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে ৩৩০টি কফ সিরাপের কার্টুন উদ্ধার করা হয়। এককেটি কার্টুনে ১০০ শিশি করে মোট ৩৩ হাজার নেশাজাতীয় ফেন্সিডাইল নামক মাদক–কফ সিরাপ ছিল। উদ্ধারকৃত কফ সিরাপগুলির কালোবাজারে মূল্য তিন কোটি টাকার বেশি হবে বলে ধারণা করছেন পুলিশ অফিসার প্রণব মিলি।
চেকগেট ইনচাৰ্জ প্ৰণব জানান, মাদকদ্ৰব্য পাচারের অভিযোগে আটক করা হযেছে কন্টেইনারের চালক জিলানি শাহ, সহ-চালক আনাশ এবং জনৈক আবরাবকে। এরা সকলেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত চালিয়েছে বলে জানান পুলিশ অফিসার। তিনি জানান, কন্টেইনারকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কনটেইনার সহ ধৃত তিনজনকে বাজারিছড়া থানা কর্তৃপক্ষের হাতে সমঝে দেওয়া হয়েছে বলে জানান চকগেট ইনচাৰ্জ প্ৰণব মিলি।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত সোমবার মধ্যরাতে ত্রিপুরায় প্রবেশের পথে অসমের চুড়াইবাড়িতে পুলিশি অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ছয় লক্ষাধিক টাকার নেশার কফ সিরাপ। এর সঙ্গে দুই পাচারকারীকে গ্রেফতারের পাশাপাপশি বায়েজাপ্ত করা হয়েছে কফ সিরাপ বোঝাই কন্টেইনার। গ্রেফতারকৃত দুজন উত্তর ত্রিপুরার কদমতলার বাসিন্দা কন্টেইনারের চালক অজিত নাথ এবং অসমের কাছাড় জেলার কাটিগড়ার বাসিন্দা সহচালক আবু কমির উদ্দিন। তাদের গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া গত শনিবারও মধ্যরাতে উত্তরপ্রদেশ থেকে অসমের ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ত্রিপুরায় পাচারের পথে এই চুড়াইবাড়িতে ধরা পড়েছিল প্রায় দু কোটি টাকার নেশার কফ সিরাপ বোঝাই ছয় চাকার একটি লরি। নেশাদ্রব্য পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে গাড়ির চালক ও সহ-চালককে। ধৃতরা যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের কাঁথরোড সিভিল লাইনের জনৈক রাকেশ শর্মার ছেলে মায়ঙ্ক শর্মা এবং প্রয়াত হাবিব মিয়াঁর ছেলে বিশাল মিয়াঁ। ইতিমধ্যে করিমগঞ্জের বিচারবিভাগীয় আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।