কালিয়াগঞ্জ ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে আদিবাসী আন্দোলনে তুমুল অশান্তি, থানায় আগুন

কালিয়াগঞ্জ, ২৫ এপ্রিল (হি. স.) : কালিয়াগঞ্জে কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত এলাকা। থানা এবং ওই চত্বরের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের থামাতে পাল্টা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের সেলও। ঘটনার জেরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। সংঘর্ষের জেরে জনা কয়েক পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন বলে কালিয়াগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে পুলিশ কয়েক জনকে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারও করেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে কালিয়াগঞ্জে থানা অভিযান কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছিল রাজবংশী তফসিলি আদিবাসী সমন্বয় কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলা হয়। ওই কমিটির তরফে বহু মানুষ থানা অভিযান করেন। কর্মসূচির আগাম খবর পেয়ে থানার সামনে তিনটি জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করেছিল পুলিশে। অভিযোগ, সেই ব্যারিকেড ভেঙে দেন আন্দোলনকারীরা। এর পর, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ছোড়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল।এরপর মারমুখী হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভকারীরা থানায় ঢুকে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় থানার একটি অংশে। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় থানায় রাখা একাধিক বাইক। একই দাবিতে মঙ্গলবার রায়গঞ্জে পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরাও অভিযান করেছিল বিজেপি। সেই কর্মসূচি ঘিরেও ছড়ায় উত্তেজনা। আন্দোলনকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেন।

রায়গঞ্জ শহরে এদিন পথে নামে সিপিআইএম-এর যুব ও ছাত্র সংগঠন। এদিন রায়গঞ্জ শহরেও বিজেপি-র পক্ষ থেকে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহন করা হয়। এদিন দলের জেলা কার্যালয়ের সামনে এমজি রোডে রাস্তা অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবীতে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। রায়গঞ্জ ইটাহারের পাশাপাশি হেমতাবাদ ব্লকেও একই ইস্যুতে আন্দোলনে নামে বিজেপি। অবিলম্বে জড়িতদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলে আগামিদিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা৷ এদিকে, এই পরিস্থিতিতে ফের একবার সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হল মৃত ছাত্রীর পরিবার। মৃতদেহের পুনরায় ময়না তদন্তের প্রয়োজন পড়তে পারে ভেবে বাড়ির কাছে মৃত নাবালিকাকে সমাধিস্থ করে পরিবার।

মৃতদেহের সংরক্ষণের জন্য সমাধিস্থল বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। রাতের জন্য আলোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মৃতার পরিবারের দাবি, পুলিশি তদন্তে তাঁদের আস্থা নেই। অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। তাহলে প্রকৃত ঘটনা সামনে আসবে। তবে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় এলাকার পরিবেশ ছিল থমথমে।