কলকাতা ১৫ এপ্রিল (হি. স.) : বঙ্গ বিজেপির সংগঠন বাড়াতে অন্য দলের কর্মীদের যোগদান করানো নিয়ে শনিবার রাজ্য বিজেপি-তে কর্মী-নেতাদের একাংশের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়। নবাগতদের দলে নেওয়া নিয়ে গত লোকসভা নির্বাচনে যথেষ্ঠ মাশুল দিতে হয়েছিল। এবার দল চাইছে যথেষ্ঠ সতর্কতা নিয়ে নবাগতদের নিতে। কিন্তু কিভাবে সেই সতর্কতা নেওয়া হবে, তা নিয়ে সকলে ধন্দে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের সংগঠনকে মজবুত করতে সংগঠন নিয়ে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বেঁধে দেওয়া সত্ত্বেও তা পূরণ করতে পারেনি বঙ্গ বিজেপি। বুথ গড়তে ব্যর্থতা। আর একুশের ভোটের পর থেকেই বিজেপির লেখচিত্র নিম্নমুখী। ফলে লোকসভার আগে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কড়া বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
দলের অন্দরে অমিত শাহর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুনীল বনশল এবং মঙ্গল পাণ্ডে। এই দু’জনকেই বাংলার পর্যবেক্ষক করেছেন তিনি। জেলায় জেলায় ঘুরে পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন সুনীল ও মঙ্গল। বঙ্গ বিজেপির সংগঠনে কোথায় গলদ রয়েছে, তার রিপোর্ট শুক্রবার রাতে কোর কমিটির বৈঠকে শাহকে দেন এই দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক।
এর পর দলের আন্দোলন-কর্মসূচি আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বৈঠকে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটে আধাসেনা দেওয়ার দাবি তোলেন। বিষয়টি কোর্টের বিচার্য বলে নস্যাৎ করে দেন শাহ। তিনি শুভেন্দুদের পালটা বলেন, ‘‘নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির উপর ভরসা করুন। সংগঠন গড়ে তুলুন।’’ জনসংযোগ বাড়াতে প্রত্যেককে প্রতিটা পরিবারের কাছে পৌঁছনোর বার্তাও দিয়েছেন শাহ।
শুক্রবার রাতের বৈঠকে শাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সাংসদ-বিধায়ক ও দলীয় নেতৃত্ব সকলকে একসঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। লোকসভায় কীভাবে আসন বাড়ানো সম্ভব, তা হিসেব কষে বুঝিয়ে দেন। পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে অন্য দলের কর্মীদেরও নিয়ে আসার যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা আবার সিউড়িতে বীরভূমের জেলানেতাদের নিয়ে বৈঠকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দলের নিচুতলার সংগঠন নিয়ে পাওয়া রিপোর্টে সন্তুষ্ট নন । বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই পঞ্চায়েত ভোট দরজায় কড়া নাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বুথ সংগঠন নিয়ে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে খুশি নন শাহ। শুক্রবার রাতে নিউটাউনের এক হোটেলে দলের কোর কমিটির সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকে এমনটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি স্পষ্ট করে রাজ্যনেতাদের বলে দিয়েছেন, খাতায়-কলমে নয়, বাস্তবে সংগঠন গড়ে দেখাতে হবে। ২০১৯’এর লোকসভা ভোটে যে সাফল্য এসেছিল সেই ভোটব্যাংক ধরে রাখতে হবে। বামেরা যেন কোনওভাবেই ‘অ্যাডভান্টেজ’ না পায় তা দেখতে হবে। পাশাপাশি বলেছেন, পঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে বুথ তৈরি করলে তার লাভ লোকসভা ভোটে পাওয়া যাবে। তাই বুথ শক্তিশালী না করলে সাফল্য আসবে না। একইসঙ্গে বলে দিয়েছেন, নিজেদের জোরে লড়তে হবে। সব ক্ষেত্রে দিল্লির উপর ভরসা করলে হবে না।