গোলাঘাটে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা রাজ্যপাল কাটারিয়ার

গুয়াহাটি, ২৭ মার্চ (হি.স.) : অসমের গোলাঘাটে আজ সোমবার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতির পর্যালোচনা করেছেন রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ কাটারিয়া। গোলাঘাটে জেলাশাসকের কার্যালয়ে কনফারেন্স হল-এ অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা করে কাজের খতিয়ান নিয়েছেন রাজ্যপাল।

পর্যালোচনা সভায় জেলাশাসক ড. পি উদয় প্রবীণ একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়ে গোলাঘাটের বিভিন্ন প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরে সেগুলির অগ্রগতির বিশদ বর্ণনা করেছেন।

কৃষি বিভাগের পর্যালোচনা করে রাজ্যপাল কাটারিয়া জেলাশাসককে নিশ্চিত করতে বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ প্রকল্পের অধীনে কোনও ন্যায্য সুবিধাভোগী যাতে এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। তিনি জেলাশাসককে প্রকল্পটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ফাসল বিমা যোজনা এবং আসাম মিলেট মিশনের অগ্রগতিরও পর্যালোচনা করেছেন রাজ্যপাল।

গোলাঘাট জেলায় রাজ্যের অধিকাংশ চা বাগান রয়েছে। তাই রাজ্যপাল চা বাগান এলাকায় স্থাপিত মডেল স্কুলগুলির খোঁজখবরও নিয়েছেন। তিনি বলেন, সব শ্রেণির মানুষকে অর্থনৈতিক প্রগতির দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তিনি বলেন, চা বাগানের শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত ও গুণগত শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সরকার চা বাগান এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষমতায়ন ঘটাতে পারে। রাজ্যপাল চা বাগানের মহিলারা যে স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন তা নিশ্চিত করার উপর জোর দেন।

এছাড়া পঞ্চায়েতি রাজ এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে রাজ্যপাল গ্রামীণ আবাসন প্রকল্প, এমজিএনরেগা-র অধীনে জবকার্ডের ব্যবস্থা, অমৃত সরোবর প্রকল্পের অগ্রগতি এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযান-গ্রামীণ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা করেছেন।

জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের অধীনে জল জীবন অভিযান সম্পর্কে রাজ্যপাল কাটারিয়া বলেন, সমস্ত সুবিধাভোগী জল পেয়েছেন কি না তা সঠিক পর্যবেক্ষণের উপরই এই প্রকল্পের আসল সাফল্য নির্ভর করবে। তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণের বর্তমান অবস্থা ইত্যাদিও খতিয়ে দেখেছেন।

রাজ্যপাল গুলাবচাঁদ কাটারিয়া পুলিশ প্রশাসনের কার্যকারিতা নিয়ে পুলিশ সুপার রমনদীপ কৌরের সাথেও বিশদ আলোচনা করেছেন। জেলায় অপরাধের হার কম হওয়ায় রাজ্যপাল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ বাড়াতে এবং পুলিশের কাজ করার উৎসাহ ও সক্ষমতা বাড়াতে তিনি থানার মধ্যে গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করার পরাপর্শ দিয়েছেন। এছাড়া সাইবার ক্রাইম ও সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতিরও খোঁজ নিয়েছেন তিনি।

পর্যালোচনা সভায় কর্মসংস্কৃতিতে ইতিবাচক এবং ভালো কাজের জন্য যথাযথ প্রশংসাকে উৎসাহিত করা উচিত বলে নিজের অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এটি একজনকে আরও ভালও পারফর্ম করতে অনুপ্রাণিত করবে। রাজ্যপাল আরও বলেন, ভালো কাজ মনকে যে তৃপ্তি দেয় তা আর কিছুই দিতে পারে না। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

পর্যালোচনা সভায় ছিলেন জেলা পরিষদের সিইও ধীরাজ দাস, বোকাখাতের মহকুমাশাসক ড, নেহা যাদব এবং বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা। জেলাশাসকের কার্যালয় সভাকক্ষে পর্যালোচনা সভায় আসার আগে রাজ্যপাল কাটারিয়া গোলাঘাটের নুমালিগড় তেল শোধনাগার পরিদর্শন করে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ল্যাব এবং সাইট ঘুরে দেখেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *