মদনলাল আগরওয়ালের জীবন হিন্দু জাতির উন্নতির অনুপ্রেরণা : সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত

কলকাতা, ৩১ জানুয়ারি (হি. স.) : সোমবার কলকাতার ইসকন মিলনায়তনে একল বিদ্যালয়ের প্রবর্তক এবং বনবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক মদনলাল আগরওয়ালের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মৃতিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত । এই অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত বলেন, ‘সনাতনকে উন্নীত করতে হবে । এর ফলে হিন্দু জাতির উত্থান হতে বাধ্য। যোগী অরবিন্দ বলেছেন, কৃষ্ণ নিজেই আমাকে বলেছেন সনাতনের উন্নতি অনিবার্য এবং এটি হিন্দু জাতিকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে। আমাদের কেবল মাধ্যম হয়ে উঠতে হবে, এবং মদনলালজির জীবন সেই মাধ্যমের অনুপ্রেরণা। তার দেখান পথে বিজয়ী পথিক হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জয় নিশ্চিত।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ মনে করে যে আমাদের কীভাবে জীবনযাপন করা উচিত, তাহলে এর উদাহরণ মদনলাল আগরওয়ালের মত আমাদের প্রাক্তন পুরুষরা, যারা ঘরে বসে পরিবার, সমাজ, জাতি এবং ঐশ্বরিক কাজকে একসাথে নিয়ে যেতে শিখিয়েছেন। তিনি তার পরিবারেরও খুব যত্ন নেন এবং একইভাবে একল বিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের যত্ন নেন যা বনবাসীদের জীবনকে উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আশা, নৈরাশ্য, খ্যাতি ও ব্যর্থতার প্রলোভন পেরিয়ে তিনি সর্বদা উদ্যমে কাজ করতেন। কেউ ভুল করলে তাকে তিরস্কার করা হয় কিন্তু তার স্নেহ এমন ছিল যে কেউ তাঁর কাছ থেকে দূরে যায়নি। তাঁর স্মৃতি যদি বাঁচিয়ে রাখতে হয়, তাহলে তাঁর দেখানো পথে চলাই হবে শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সংঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার এবং শ্রী গুরুজির জীবনের কথা স্মরণ করে ভাগবত বলেন, ‘হেডগেওয়ারজির মত একজন কর্মযোগী এবং গুরুজির মত একজন নিখুঁত মানুষ জাতির উন্নতির জন্য তাদের পুরো জীবন ব্যয় করেছিলেন। সেজন্য আমরা আজ সেই দিনগুলো দেখতে পাচ্ছি যা তাঁরা দেখেনি, আমাদেরও বিচলিত না হয়ে আমাদের কর্তব্যের পথে অগ্রসর হতে হবে। মদনলাল আগরওয়াল এবং আমাদের অন্যান্য পূর্ব পুরুষদের জীবন আমাদের শিখিয়েছে যে জীবনের যে কোনও বাধা নির্বিশেষে, তার সমাধান খুঁজে বের করা এবং সেই পথে ক্রমাগত এগিয়ে চলা যেকোনও লক্ষ্য অর্জনের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।’

গুরুজীর উদাহরণ তুলে ধরে ভাগবত বলেন, ‘যখন সংঘ প্রথম নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তখন অনেকেই বলেছিলেন যে এখন আমাদের কাজ বন্ধ করা উচিত। এতে অনেক বৃদ্ধ লোকও ছিল, কিন্তু গুরুজী তাঁদের স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন , আপনারা আমাদের সাথে চললে ঠিক আছে, অন্যথায় আমি আমার পথ ঠিক করে নিয়েছি। একা প্রয়োজন হলে নতুন স্বয়ংস্ববকদের নিয়ে শাখা লাগাব, কিন্তু কাজ বন্ধ হবে না। মদনলাল আগরওয়ালেরও একই সংকল্প ছিল এবং প্রত্যেক স্বয়ংসেবককে এই দৃঢ় সংকল্প ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

ভাগবত আরও বলেন যে, ‘ভারতীয় ঐতিহ্যে শরীর, মন, বুদ্ধি এবং আত্মার প্রয়োজন বিবেচনা করা হয়েছে। আমাদের ইতিহাসে এমন অনেক মহাপুরুষ আছেন যারা এই চার পথে হেঁটে জীবনের আদর্শ দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন এবং এমন মানুষ আজও আছেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমরা যে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যের দিকে ছুটছি সেদিকে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। এটি হবে মদনলাল আগরওয়াল এবং অন্যান্য মহাপুরুষদের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি।’ এদিনের অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিখ্যাত সমাজসেবক ও শিল্পপতি সজ্জন ভজাঙ্কা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মদনলাল আগরওয়ালের ছেলে চন্দ্রমোহন আগরওয়াল।