পাথারকান্দি (অসম), ২৩ জানুয়ারি (হি.স.) : করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত পাথারকান্দি থানাধীন বৈঠাখালে অসম-ত্রিপুরা ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি কালভার্টের নীচে উদ্ধার হয়েছে জনৈক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছেন উত্তেজিত জনতা। মৃত যুবককে শারীরিকভাবে সক্ষম কাটাবাড়ি গ্রামের জনৈক হারুধন সিনহার বছর ৩২-এর ছেলে রণো সিনহা বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামল দিকে স্নিপার ডগ নিয়ে মাঠে নেমেছেন সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। জানা গেছে, অবিবাহিত রণো সিনহার একটি দোকান রয়েছে বৈঠাখাল বাজার লাগোয়া ঘোষেরঘর এলাকায়। তাই তিনি প্রতি রাতে বাড়িতে খাবার-দাবার শেষে নিজের দোকানে এসে ঘুমাতেন। তাছাড়া তিনি পাথারকান্দির একটি ব্যংকের সিএসপি কর্মীও ছিলেন। ফলে প্রতিনিয়ত তাঁকে স্কুটার নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হত।
রবিবার রাতেও তিনি যথারীতি নিজের দোকানে এসে ঘুমিয়েছিলেন। আজ সোমবার কাকভোরে দোকান থেকে টিলছোঁড়া দূরত্বে জাতীয় সড়কের কালভার্টের নীচে ডান পাশে তাঁর স্কুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পান কয়েকজন। তাঁরা এগিয়ে গিয়ে দেখেন, স্কুটির নীচে পড়ে রয়েছে রণো সিনহার নিথর দেহ।
এই খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে ভিড় জমান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পাথারকান্দি থানার ওসি সমরজিৎ বসুমাতারি সহ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে আসেন পাথারকান্দির সার্কল অফিসার। এছাড়া আসেন জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিককারিকরা। তাঁরা মৃতদেহের প্রাথমিক তদন্ত করে দেখেন, মৃতের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এতে পুলিশ সহ স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্নে্র সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়দের ধারণা, রণো সিনহার সাথে ব্যাংকের টাকা থাকায় দুষ্কৃতীরা তাঁকে মেরে ছিনতাই করে স্কুটি সহ কালভার্টের নীচে ফেলে আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এই সন্দেহের বশে পুলিশ রণো সিনহার দোকানে গিয়ে ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ দেখতে পেয়েছে। পাশে ছড়িয়ে-ছিটেয়ে ছিল তাঁর চপ্পল। এতে রণো যে খুন হয়েছেন, সে ধারণা স্পষ্ট হয়ে গেছে।
পরে শিলচর থেকে নিয়ে আসা হয় গোয়েন্দা কুকুর তথা স্নিপার ডগ। কুকুরটি তদন্তে নেমে বেশকিছু ক্লু সংগ্রহ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ওসি জানিয়েছেন, শীঘ্রই খুনিদের তাঁরা ধরতে পারবেন। অন্যদিকে রণোর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, ঘটনায় উত্তেজিত জনতা প্রায় দু-ঘণ্টা অসম-আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেন। তাঁদের দাবি, শীঘ্র রণোর খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক সাহায্যের জন্য বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল, জেলাশাসক, পুলিশ সুপার হস্তক্ষেপ করুন।

