আগরতলা, ১৩ জানুয়ারি(হি. স.) : ত্রিপুরা হাই কোর্টে স্থায়ী মুখ্য বিচারপতির অনুপস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। উদ্ভূত এই সমস্যা সমাধানে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি পাঠিয়েছেন ত্রিপুরায় কর্মরত আড়াই শতাধিক আইনজীবি।
এ-বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বরিষ্ঠ আইনজীবি শঙ্কর দেব বলেন, ২০২২ সালের নভেম্বরে ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রাক্তন মুখ্য বিচারপতি ইন্দ্রজিৎ মহান্তি অবসরে গেছেন। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারপতি শুভাশীষ তলাপাত্র উড়িষ্যা হাইকোর্টে বদলি হয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিচারপতি এস জি চট্টোপাধ্যায় ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন। ফলে, বর্তমানে বিচারপতির সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে দুই। তাতে, বেশ কিছু সংবেদনশীল এবং জটিল মামলার শুনানি থমকে রয়েছে।
তাঁর কথায়, ২০১৩ সালে ত্রিপুরা পূর্ণাঙ্গ হাইকোর্ট পেয়েছে। তখন হাইকোর্টে পাঁচজন বিচারপতির অনুমোদিত শক্তি ছিল। কাগজে কলমে হাইকোর্টে পাঁচজন বিচারপতির অধিকার থাকলেও আদালত পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ কখনোই পায়নি। গত জানুয়ারি থেকে ত্রিপুরা হাইকোর্টে মাত্র দুইজন বিচারপতি কর্মরত রয়েছেন। ফলে, অনেক ক্ষেত্রে মামলার শুনানিতে বিলম্ব হচ্ছে। শুধু তাই নয়, জটিল সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে, বলেন তিনি।
এ-বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, যদি একজন মামলাকারী সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে চান, তাহলে তাঁকে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানাতে হবে। কিন্তু, বিচারপতির সংখ্যা মাত্র দুই হওয়ায় ওই মামলাকারী ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করতে পারবেন না। কারণ এক্ষেত্রে ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করাই সম্ভব হচ্ছে না। তাই, স্থায়ী মুখ্য বিচারপতি নিয়োগে বিলম্বের কারণে বেশ কয়েকজন আবেদনকারী বিপাকে পড়েছেন, জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে আইনজীবি সোমিক দেব বলেন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা রয়েছে যা প্রথম থেকেই শুনানির জন্য একটি ডিভিশন বেঞ্চের যোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, মৃত্যুদণ্ড এবং সালিসির মতো মামলায় রায়ের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মুখ্য বিচারপতির এক্তিয়ার রয়েছে। তাছাড়া, আদালতের জন্য নতুন বিচারপতি নিয়োগের মতো বিষয়গুলিতে মুখ্য বিচারপতির বক্তব্যের গুরুত্ব রয়েছে। তাই বিলম্বের কারণে ন্যায়বিচারের পুরো প্রক্রিয়াই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আমাদের বিষয়গুলো শুনবেন।
অন্যদিকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট পুরুষোত্তম রায় বর্মন বলেন, “এটা বেদনাদায়ক যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া সত্বেও আমাদের হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতি ছাড়া চলছে।প্রসঙ্গত, বিচারপতি টি অমরনাথ গৌড় ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারপতি নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি ছাড়াও বিচারপতি অরিন্দম লোধও এই আদালতের বর্তমান বিচারপতি হিসেবে কর্মরত আছেন।