আগরতলা, ২ জানুয়ারি (হি. স.) : নতুন বছরেই বড় খবর শুনালেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। ঊনকোটি জেলার হীরাছড়ায় ৫০০ একর জায়গায় হবে নতুন বিমান বন্দর। আজ ফটিকরায় মন্ডল আয়োজিত সুবিশাল সংকল্প রেলীতে অংশ নিয়ে এই সংবাদ শুনিয়েছেন তিনি। সাথে তিনি কংগ্রেস ও কমিউনিস্টদের মিতালির জন্য বিঁধেছেন।
এদিন তিনি বলেন, কংগ্রেস ও কমিউনিস্টরা মানুষের অহীতকারী অসুরিয় শক্তি। তাঁরা মিলেই ২৫ বছর ত্রিপুরার মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। দূর্গারূপী নারী শক্তিরাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে গণতান্ত্রিক পথে এই অসুর শক্তিকে বধ করবে।
সোমবার ঊনকোটি জেলায় বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। প্রথমেই চন্ডিপুর বিধানসভার মূর্তিছড়া চা-বাগানের শ্রমিকদের সাথে মত বিনিময় করেন। সবশেষে ফটিকরায়ের জগন্নাথপুর বাগান পাড়ায় চা শ্রমিকদের সাথে মত বিনিময় বৈঠক করেন। এদিন একজন চা-শ্রমিকের বাড়িতে মধ্যাহ্ণ ভোজনও করেন তিনিl
এদিন বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ঊনকোটি বিশ্ব মানচিত্রে স্থান পেতে চলেছে। ফলে, এই জেলায় বিমান বন্দরের ভীষণ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাঁর কথায়, বামেদের ব্যর্থতার কারণেই চালু বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, প্রত্নতাত্মিক বিভাগের শাখা খোলার পাশাপাশি কৈলাসহরে বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে সংসদে জোরালো দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। ঊনকোটির সৌন্দর্য ও গরিমা তাজমহল থেকে কোনো অংশে কম নয়। বর্তমান সরকারের যথার্থ প্রচার প্রসারের ফলে ঊনকোটি ইউনেস্কোর সম্ভাব্য তালিকায় উঠে এসেছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলির বিকাশের ফলে, পর্যটকদের আসার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে, রোজগারের সুযোগ বাড়ছে।
তাঁর বক্তব্য, কৈলাসহর পাইতুরবাজার বিমান বন্দরটি বড় বিমানবন্দর নির্মাণে সম্ভব নয়। তাই, নতুন স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ঊনকোটি জেলার হীরাছড়া চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় ৫০০ একর জায়গায় নতুন বিমান বন্দর হবে। আগরতলা এমবিবি বিমান বন্দরের মতোই উন্নত মানের হবে ওই বিমানবন্দর। তখন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসবেন।
এদিন বামেদের সমালোচনায় তিনি বলেন, ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেস থাকলে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও কমিউনিস্টদের উৎখাত করে পরিবর্তন সম্ভব হতো না। পর্দার আড়ালে তাঁদের মিতালি এখন স্পষ্ট। তাঁর দাবি, বিজেপির আপোষহীন প্রচেষ্টায় ত্রিপুরায় শুধুই ক্ষমতার বদল নয়, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে গড় আয় উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভীত সুদৃঢ় হয়েছে। এর ফল স্বরূপ সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে জিএসটি সংগ্রহের পরিমান এক বছরে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার অর্থ বছরে পাঁচ লক্ষের অধিক উপার্জনকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, বলেন তিনি। তাঁর মতে, কমিউনিস্টরা মানুষকে বঞ্চিত করতে জানে। বিজেপি অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সকল স্তরের কল্যানে কাজ করে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সদিচ্ছায় জমির মালিকানা পেয়েছে ত্রিপুরার মানুষ। আর্থ সামাজিক জীবনমান বিকাশে একাধিক পরিকল্পনা রূপয়িত হয়েছে। তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থে সহজ সরল চা-শ্রমিককদের বিগত ২৫ বছর যাবদ অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদীর আন্তরিকতায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের সমস্ত জাতি গোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নের সুফল তাঁরাও পাচ্ছেন।এদিন বিপ্লব দেব আহবান রাখেন, আগামী এক মাস নিরলস পরিশ্রম করে রাজ্যে প্রবাহমান উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে তেইশে আরও অধিক সমর্থন নিয়ে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবেl এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ভগবান দাশ, বিধায়ক সুধাংশু দাশ প্রমুখ।