শান্তিরবাজার, ৩১ ডিসেম্বর (হি. স.) : একই দিনে ট্রমা কেয়ার সেন্টার, বিদ্যালয়ের নবনির্মিত পাকা ভবন এবং কৃষি তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা:) মানিক সাহা।
রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নই সরকারের লক্ষ্য। চিকিৎসা, শিক্ষা, খেলাধুলা, কৃষি, যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানের সফল বাস্তবায়ণের মাধ্যমে সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সুশাসনের সুফল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আজ শান্তিরবাজারস্থিত দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টারের নবনির্মিত পাকা ভবনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এই কথা বলেন।
তাঁর কথায়, উন্নয়নের মানদন্ডের বিচারে একটা হাসপাতালের সর্বোচ্চ উন্নয়ন হল ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন। একটা হাসপাতাল কতটা উন্নত তা তার ট্রমা কেয়ার সেন্টার দেখলে বোঝা যায়। কারণ এই সেন্টারে গুরুতর আহতদের অত্যন্ত দ্রুততার সাথে চিকিৎসা দিতে হয়। প্রাণ বাচানোর কেন্দ্র এটা।
তাঁর বক্তব্য, স্টেট রেফারেল হাসপাতালগুলিতে রোগীর চাপ কমিয়ে আনার জন্য জেলা হাসপাতালগুলিতে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা ও ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে যাতে পর্যাপ্ত রক্তের ব্যবস্থা রাখার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং। সভাপতিত্ব করেন শান্তিরবাজার পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন স্বপ্না বৈদ্য। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক শংকর রায়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডা. সুভাশিস দেববর্মা।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। ৮ শয্যা বিশিষ্ট এই ট্রমা কেয়ার সেন্টারে রয়েছে পুরুষ ও মহিলা বিভাগ, এক্স-রে ইউনিট, সোনোগ্রাফি, আইসিইউ ও অপারেশন থিয়েটার।
ট্রমা সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বাইখোরা ইংলিশ মিডিয়াম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নবনির্মিত পাকা ভবনের উদ্বোধন করেন। এই বিদ্যালয়ের পাকা ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ ২২ হাজার ৯৮৫ টাকা।
এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত ছাত্র অভিভাবক সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে নতুন বিদ্যালয়, কলেজ স্থাপন করছে সরকার। ইতিমধ্যে ডেন্টাল কলেজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জিরানীয়ায় ল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।
সাথে তিনি যোগ করেন, সাব্রুমে বুদ্ধিস্ট ইউনির্ভাসিটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা, সংস্কৃতি চর্চা ও সমাজসেবামূলক কাজে আগ্রহী হওয়ার পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন প্রধান শিক্ষক শান্তি মলসম।
এদিকে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা সফরে এসে আজ মুখ্যমন্ত্রী জোলাইবাড়ি কৃষি মহকুমার কৃষি তত্ত্বাবধায়ক অফিসেরও দ্বারোদঘাটন করেন। দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের কাছে আমাদের প্রশাসনকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। জোলাইবাড়ি এলাকার কৃষকদের আগে কৃষি পরামর্শের জন্য শান্তিরবাজার যেতে হত। এখন হাতের কাছে কৃষকগণ কৃষি পরামর্শ পাবেন।তিনি বলেন, কৃষক পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন, সহায়ক মূল্যে ধানক্রয় ও কৃষির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলির সুবিধা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এতে কৃষকদের রোজগার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, বিধায়ক শংকর রায়, বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং প্রমুখ।