ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬৮, আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা প্রেসিডেন্টের

জাকার্তা, ২২ নভেম্বর (হি. স.) : ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে সোমবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত ২৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও ১৫১ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ভয়াবহ ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। গৃহহীন হয়েছে সাত হাজারের বেশি মানুষ। মৃতদের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছে ইন্দোনেশিয়ার প্রশাসন।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞে শোক প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই স্কুল পড়ুয়া। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, স্কুলের নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অতিরিক্ত সময় নিয়ে পড়াশোনা করছিল খুদেরা। স্কুলে থাকাকালীন সময়েই ভূমিকম্প হওয়ার ফলে পড়ুয়াদের অধিকাংশই বেরতে পারেনি। ফলে বাড়ি চাপা পড়েই মৃত্যু হয়েছে তাদের। সোমবার রাত পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ১৬২। মঙ্গলবার পুরোদমে উদ্ধারকাজ শুরু হতেই লাফিয়ে বেড়ে যায় এই সংখ্যা।

ইন্দোনেশিয়ার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রধান জানিয়েছেন, ২৬৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বহু মানুষ আটকে রয়েছেন ও তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেই জানিয়েছে সেদেশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। সকলকে সুস্থভাবে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনা যাবে, এমনটাই আশা করছে স্থানীয় প্রশাসন। ভূমিকম্পের পরে ইতিমধ্যেই ২৫ বার আফটার শক দেখা গিয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। সেই কারণেই সুনামির আশঙ্কাও থেকেই যাচ্ছে।

মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। সেখানেই ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেন তিনি। সেই সঙ্গে উদ্ধারকাজে গতি আনতে নির্দেশ দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট।

ভূমিকম্প এতটাই তীব্র ছিল যে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে। তিন শতাধিক ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন সাত শতাধিক মানুষ। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৩৭৭ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ত্রাণ সংস্থাগুলি উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সিয়ানজুরের একজন কর্মকর্তা হারমান সুহরমান বলেন, পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং যোগাযোগের মাধ্যমগুলোও ভেঙে পড়েছে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সি জানিয়েছে, একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল, একটি হাসপাতাল এবং অন্যান্য পাবলিক সুবিধা সহ কয়েক ডজন সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই ভূমিকম্পে শোকাহত। তিনি টুইট করেছেন যে, ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির খবর শুনে খুবই খারাপ লাগছে। নিহত ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে তিনি বলেছেন যে, এই শোকের মুহুর্তে ভারত ইন্দোনেশিয়ার পাশে আছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল রিখটার স্কেলে ৫.৬ মাত্রায় কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়ার সিয়ানজুর। তারপরের দিন প্রতিবেশী সলোমন আইল্যান্ডেও কম্পন অনূভূত হয়। প্রাকৃতিক কারণে বরাবরই বেশ বিপজ্জনক অবস্থানে থাকে ইন্দোনেশিয়া। সামান্য প্রাকৃতিক কারণে যেকোনও সময়ে বড়সড় বিপর্যয় নেমে আসে সেদেশে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *