কলকাতা, ৫ নভেম্বর (হি. স.) :“এসপি কেন আপনি আপনার কর্মীদের ভালোভাবে প্রস্তুত করছেন না? আপনার বাহিনী ‘চটি চাটা’ ব্রিগেডের সম্প্রসারণে পরিণত হয়েছে, তাদের পরিবর্তে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির দিকে মনোযোগ দিতে হবে।”
রাজ্য পুলিশের ডিজি মদন মালব্য এবং মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে যুক্ত করে শনিবার টুইটারে এই ভাষাতেই তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুবাবু লিখেছেন, “গতবার ছিল দুর্গাচক পুলিশ। অভিন্ন ঘটনা; প্রথম তারা নোটিশ দিয়েছে এবং তারপর এটি বাতিল করেছে।”
ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ঘৃণাভাষণ দেওয়ার অভিযোগে এক আইনজীবীর দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস। এটি পাঠিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার পুলিশ। কিন্তু বিরোধী দলনেতা হিসাবে হাইকোর্টের রক্ষাকবচ থাকায় প্রত্যাহার করা হয় সেই নোটিস।
সম্প্রতি একাধিক পুজোমণ্ডপে গিয়ে ঘৃণাভাষণ দেওয়ার অভিযোগ তুলে নন্দকুমার থানায় অভিযোগ (কেস নং-৩৯০/২২) দায়ের করেন আবু সোহেল নামে এক আইনজীবী। ২৮ সেপ্টেম্বর একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারায় শুভেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান সোহেল।
সেই মামলার ভিত্তিতে নন্দকুমার থানার তরফে ওই মামলার তদন্তকারী আধিকারিক শুভেন্দুবাবুকে ইমেল করে জানতে চান, কবে নাগাদ তিনি তদন্তের স্বার্থে থানায় আসবেন। এর পর, প্রথমে শুভেন্দুবাবুর আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী ইমেল করে থানায় জানান যে, তাঁর মক্কেল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে যে কোনও দিন যেতে পারেন। তবে সময় এবং তারিখ জানানো হয়নি। এর পর গত ২ নভেম্বর তদন্তকারী আধিকারিক আবার শুভেন্দুবাবুকে নোটিস পাঠিয়ে জানান যে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জানাতে হবে, কবে নাগাদ তিনি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় হাজির হবেন।
এর পর শুভেন্দুবাবুর তরফে আইনজীবী ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার একটি নির্দেশিকা উল্লেখ করে জানান যে, ৪১এ ধারায় কোনও মামলায় শুভেন্দুবাবুকে নোটিস দেওয়া যাবে না। হাইকোর্টের এমন নির্দেশিকার বিষয়ে জানার পরেই নন্দকুমার থানার তরফে শুভেন্দুকে ৪ নভেম্বর পাল্টা ইমেল এবং নোটিস পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, পুলিশের তরফে জারি করা ওই নোটিসটি বাতিল করা হচ্ছে।
নোটিস প্রত্যাহার নিয়ে শুভেন্দুবাবুর আইনজীবী দাবি করেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী এক জন দায়িত্বশীল নাগরিক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসেবে তাঁর প্রতি দিনই ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে। তা ছাড়া শুভেন্দুবাবুর হাইকোর্টের রক্ষাকবচ রয়েছে। এ নিয়ে পুলিশকে লিখিত ভাবে জানাই। তার পর পুলিশের তরফ থেকে নোটিস প্রত্যাহার করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নোটিস প্রত্যাহারের বিষয়ে থানা থেকে শুভেন্দুকে ইমেল এবং আরও একটি নোটিস দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

