আগরতলা, ১৯ অক্টোবর (হি.স.) : আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গঠনে আগামীদিনে রাজ্যের আইটি সেক্টরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তাই ত্রিপুরা সরকার আইটি শিল্পের উন্নয়নে গত ৪ বছরে বহু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি রাজ্যেও আইটি/আইটিইএস স্টার্ট-আপ ইন্ডাস্ট্রিজ বৃদ্ধির মাধ্যমে আইটি শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার ত্রিপুরা আইটি/আইটিইএস স্টার্ট-আপ স্কিম ২০১৯ চালু করেছে। আজ বুধবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ত্রিপুরা স্টার্ট-আপ সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় আইটি সেক্টর উন্নয়নের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। বিশেষত ত্রিপুরার শিক্ষার হার দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় প্রশংসনীয় স্থানে রয়েছে। ত্রিপুরায় স্কুল, কলেজ, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং আইটিআই সহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে ত্রিপুরার ছেলেমেয়েরা সেই সব প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেদের আইটি সেক্টরে দক্ষ করে তুলছে।
সাথে তিনি যোগ করেন, এছাড়াও আইটি সেক্টরে উন্নয়নের সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে ত্রিপুরায় পর্যাপ্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, দূষণমুক্ত পরিবেশ, রেল সড়ক ও বিমানপথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ও বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এ সমস্ত অনুকূল পরিবেশ কাজে লাগিয়ে রাজ্যে আইটি-শিল্প স্থাপনের জন্য উদ্যোগপতিদের প্রতি আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
ত্রিপুরা স্টার্ট-আপ সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান মঞ্চে ‘চিত্রিকা’ ও ‘ওমান’ নামে দুটি স্টার্ট-আপ প্রোডাক্ট এবং মেডিক অ্যাপ, ক্যারিয়ার বিচার এবং গ্লোসেল নামে তিনটি স্টার্ট-আপ পরিষেবার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা আইটি/আইটিইএস পলিসি-২০২২ এবং ত্রিপুরা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৫০টি স্টার্ট-আপ আইটি/আইটিইএস স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া পোর্টালে নথিবদ্ধ হয়েছে। এরমধ্যে ১৩টি স্টার্ট-আপ ত্রিপুরা আইটি/আইটিইএস স্টার্ট-আপ স্কিমে নথিবদ্ধ হয়েছে। তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) দফতর থেকে তাদের আর্থিক ও অন্যান্য সাহায্যও প্রদান করা হচ্ছে।
তাঁর দাবি, সমস্ত টেকনিক্যাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে স্টার্ট আপ ইকো সিস্টেমে একই ছাদের তলায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার নিউ জেনারেশন ইনোভেশন নেটওয়ার্ক প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পে পরিকাঠামো উন্নয়নে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা অনুদান হিসেবে এবং পরিচালনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রতি বছর ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার সংস্থান রয়েছে। এখন পর্যন্ত এনআইটি, টিআইটি, ইকফাই এবং টেকনো ইন্ডিয়া সহ মোট ৪টি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠানকে নিউ জেনারেশন ইনোভেশন নেটওয়ার্ক প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান যুগ সম্পূর্ণভাবে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডিজিট্যাল ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ই-পরিষেবা চালু করার ফলে সাধারণ মানুষের হয়রানিও কমেছে।
অনুষ্ঠান মঞ্চে এছাড়াও নিউ জেনারেশন ইনোভেশন নেটওয়ার্ক প্রকল্পে দুটি স্টার্ট-আপকে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা করে অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এই দুটি স্টার্ট-আপের কর্মকর্তার হাতে চেক তুলে দেন।