আগরতলা, ১৪ অক্টোবর (হি. স.) : ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই শাসক জোট শিবিরে ঝড় উঠেছে। আইপিএফটির এক বিধায়ক আজ বিধানসভার সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। সবচেয়ে চমকের বিষয় হল, তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মাকে সাথে নিয়ে ৪৪-রাইমাভ্যালী বিধানসভা কেন্দ্রের আইপিএফটির বিধায়ক ধনঞ্জয় ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগ পত্র তুলে দিয়েছেন। অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, নিয়ম মেনেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ধনঞ্জয় ত্রিপুরা। সমস্ত কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর পদত্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিজেপির পাঁচ জন এবং আইপিএফটির দুইজন বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ৯-বনমালীপুর কেন্দ্রের বিধায়ক বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় বিধানসভার সদস্য পদে পদত্যাগ করেছেন। এদিকে, উপনির্বাচনে একটি আসন কংগ্রেস দখলে নিয়েছে এবং দুইটি আসন বিজেপি দখলে রেখতে পেরেছে। আজ ধনঞ্জয় ত্রিপুরার পদত্যাগে এই মুহুর্তে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হবে না। ফলে, সিমনা, করবুক ও বনমালীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাইমাভ্যালী বিধানসভা কেন্দ্রও ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত শূন্য থেকে যাবে।
এদিন অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে ধনঞ্জয় ত্রিপুরা আইপিএফটির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, আইপিএফটির সাথেই রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়েছিল। ৮ বছর ওই দলে থেকে জনজাতি কল্যাণের বদলে হতাশ হতে হয়েছে। জনজাতি কল্যাণ এখনো অলীক স্বপ্ন, তাই আইপিএফটি দল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে মোতাবেক বিধানসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।
তিনি আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তিপরা মথা দলে যোগ দেবেন। মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁর বক্তব্য, আইপিএফটিতে থেকে জনজাতিদের কল্যাণে দাবি আদায় সম্ভব হয়নি। তাই, বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ধনঞ্জয় ত্রিপুরা তিপরা মথা দলে যোগ দেবেন। ইতিপূর্বে আইপিএফটি বিধায়ক পদে পদত্যাগ করে বৃষকেতু দেববর্মাও তিপরা মথা যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে বুর্বুমোহন ত্রিপুরাও তিপরা মথা দলে যোগ দিয়েছেন।
ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী বলেন, নিয়ম মেনেই ধনঞ্জয় ত্রিপুরা বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সমস্ত কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়েছে। আজ থেকেই তিনি বিধায়ক থাকছেন না। অধ্যক্ষ বলেন, ব্যক্তিগত কারণে বিধায়ক পদে থাকতে চাইছেন না ধনঞ্জয় ত্রিপুরা।প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা বিধানসভায় বর্তমানে চারটি আসন শূন্য রয়েছে। বৃষকেতু দেববর্মা, বুর্বুমোহন ত্রিপুরা, বিপ্লব কুমার দেব এবং ধনঞ্জয় ত্রিপুরার আসন শূন্য হয়েছে। বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। বাকি তিনজন বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে তিপরা মথা দলে যোগ দিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে, চলতি মাসে আরও একজন আইপিএফটির বিধায়ক বিধানসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিপরা মথা দলে নাম লেখাতে চলেছেন। তিনি একদা মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।