আগরতলা, ৩০ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : ক্যান্সার ও অসংক্রামক ব্যাধি সনাক্তকরণ অভিযানে স্বাস্থ্যকর্মীদের মিশন মুডে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা।
আজ শুক্রবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকীভবনে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত “মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার ও অসংক্রামক ব্যাধি সনাক্তকরণ ও লোক সচেতনতা, অভিযানের রাজ্যভিত্তিক কর্মসূচির সূচনা করে বলেন, ক্যান্সার আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই মুখগহ্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাই এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন আরও বেশি করে সংগঠিত করার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে উদ্যোগ নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার ও অসংক্রামক ব্যাধি সনাক্তকরণ ও লোক সচেতনতা অভিযানকে ১০০ শতাংশ সফল করার লক্ষ্যে চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের মিশন মুডে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুবিধা প্রত্যেক জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার সম্প্রতি প্রতি ঘরে সুশাসন’ অভিযান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই অভিযানের অঙ্গ হিসাবে বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। মেলা ও প্রদর্শনীমূলক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার ও অসংক্রামক ব্যাধি সনাক্তকরণ ও লোক সচেতনতা অভিযানের প্রচার করার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে উদ্যোগ নিতে হবে।
তাঁর কথায়, যেকোন রোগের উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রোগ সংক্রান্ত কোন বিষয়কেই অবহেলা করা অনুচিত। তাই মানুষকে বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরকে বেশি করে প্রচারাভিযান করার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, মানব সভ্যতাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। করোনা অতিমারীর সময়েও চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা দিনরাত সেবা প্রদান করে গেছেন। এই অভিযানকে সফলরূপ দেওয়ার জন্য সকলকেই মিশন মুডে কাজ করতে হবে।
স্বাগত ভাষণে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন ডিরেক্টর শুভাশিষ দাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার ও অসংক্রামক ব্যাধি সনাক্তকরণ ও লোক সচেতনতা অভিযানে’ মুখগহ্বর, স্তন এবং জরায়ু ক্যান্সারের পাশাপাশি বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের স্ক্রীনিং করার মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ সনাক্তকরণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই অভিযান আগামী ১৫ অক্টোবর, ২০২২ থেকে শুরু করে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে চলবে। এই চারমাসব্যাপী ৩০ উর্দ্ধ ২ লক্ষ নাগরিককে এই বিশেষ অভিযানের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিধি কোটপা, ২০০৩ সংক্রান্ত আইনের ধারা বাস্তবায়ন, তামাক মুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তামাক বিরোধী অভিযান ইত্যাদি সফলভাবে বাস্তবায়ন করার ফলে যথাক্রমে পশ্চিম জেলা, দক্ষিণ জেলা, সিপাহীজলা জেলা ও ধলাই জেলার তামাক নিয়ন্ত্রণ শাখাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।এদিকে, অনবদ্য পরিষেবা প্রদানের জন্য ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন এন্ড কন্ট্রোল অব ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এন্ড স্ট্রোক প্রোগ্রামের ৪টি জেলার জেলা এনসিডি সেলকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এই ৪টি জেলা হলো- দক্ষিণ, পশ্চিম, ঊনকোটি ও সিপাহীজলা জেলা। ন্যাশনাল ওরাল হেলথ প্রোগ্রাম’র বিভিন্ন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন ও চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য রাজ্যের ৪ জন দন্ত চিকিৎসককে (মেডিক্যাল অফিসার) অনুষ্ঠান মঞ্চে পুরস্কৃত করা হয়েছে।