ইরানে পোশাকের স্বাধীনতার বিক্ষোভে মৃত্যু বেড়ে ৫০

তেহরান, ২৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ইরানের বিক্ষোভে কমপক্ষে ৫০ জনের বেশি মানুষ মৃত্যু হয়েছে । অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ফলে এই নিহতের ঘটনাগুলো ঘটেছে।

আইএইচআর বলছে, ইরানের উত্তর গিলান প্রদেশের রেজভানশাহর শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর ধরানো আগুনে ৬ জন মারা গেছেন। এ ছাড়া আমোল, উত্তর ইরানেও নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
সংগঠনটির পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম এএফপিকে ৫০ জন মারা যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, এরপরও (ইরানে) মানুষ তার মৌলিক অধিকার ও মর্যাদার জন্য প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।
তবে ইরানি কর্তৃপক্ষের হিসেবে, ৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ নিহতের সংখ্যা ১৭ জন। এক সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ এরই মধ্যে দেশটির ৮০টি শহরে ছড়িয়ে গেছে।

মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদ ও পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভকারীদের ‘ইসরায়েলের সেনা’ হিসেবে অবিহিত করছে সরকারপন্থি ও হিজাবপন্থিরা। তারাও বিক্ষোভের আয়োজন করেছে এবং সেই বিক্ষোভ সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে।
‘ইসরায়েল নিপাত যাক’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘কোরআনের অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা উচিত’- স্লোগানে তেহরানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর প্রদক্ষিণ করে সরকারপন্থিদের মিছিল।
কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেফতার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি।
পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেফতার পর তাকে পেটানো হয়।
টুইটারে #মাহসাআমিনি এবং #মাহসা-আমিনি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর।
চলমান উত্তাল পরিস্থিতিতে ইরানে ইন্টারনেটের গতিও কমিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। একটি বড় মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্ক ব্যাহত হওয়ার কারণে লাখ লাখ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।-