গুয়াহাটি, ১৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : ২০২১-এর এপ্ৰিল থেকে চলতি বছরের এপ্ৰিল পর্যন্ত আৰ্টফেড-এর মুখ্য কার্যালয় স্থানীয় তাঁতিদের উৎপাদিত মোট ২৩,৫৯,২০৫ টাকার ১৩,১৯৪টি গামোছা কিনেছে। এগুলি বিভিন্ন সমবায় সমিতি, উৎপাদক গোষ্ঠী প্রভৃতির কাছ থেকে ক্রয় করে আৰ্টফেড-এর বিক্ৰয়কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ করেছে সংশ্লিষ্ট দফতর। আজ বুধবার অসম বিধানসভার শরৎকালীন অধিবেশনের তৃতীয় দিন সদনে এই তথ্য তুলে ধরেছেন হস্ততাঁত ও বস্ত্ৰ দফতরের মন্ত্ৰী উৰ্খাও গৌড়া ব্ৰহ্ম।
বিধানসভায় বিরোধী দলপতি দেবব্ৰত শইকিয়া আৰ্টফেড এবং অসমিয়া গামোছার ভবিষ্যত সম্পর্কিত কয়েকটি প্ৰশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মন্ত্ৰী ব্রহ্ম এই তথ্য জানান। মন্ত্ৰী উর্খাও গৌড়া বলেন, দেবব্ৰত শইকিয়া প্ৰশ্ন তুলেছেন, ২০২১ সালের এপ্ৰিল থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আর্টফেড কৰ্তৃরক্ষ রাজ্যের স্থানীয় তাঁতিদের কাছ থেকে গামোছা কেনেননি। দেবব্ৰতবাবুর এই দাবি সত্য নয়।
বিধায়ক শইকিয়ার প্ৰশ্নের জবাবে মন্ত্ৰী ব্রহ্ম আরও বলেন, আর্টফেড-এর অধীনে ৪৩টি বিক্ৰয়কেন্দ্ৰ আছে। এর মধ্যে ১০টি বিক্ৰয়কেন্দ্ৰ আধুনিকীকরণের জন্য আৰ্টফেড-র কাছ থেকে প্রাপ্ত প্ৰস্তাব সরকারের বিবেচনাধীন। মন্ত্ৰী ব্ৰহ্ম সদনকে জানান, আর্টফেড-এর উৎপাদন কেন্দ্ৰগুলির কারিগরি দিক উন্নত করে এগুলির উৎপাদন বাড়াতেও সরকার বিবেচনা করছে।
এদিকে, আর্টফেড-এর কর্মচারিদের বেতন প্রসঙ্গে বিধায়কের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, আর্টফেড-এর কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয় আর্টফেড-এর নিজস্ব আয় থেকে। কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে গত দু-বছরে আর্টফেড-এর আয় কমে যাওয়ায় বেতন প্ৰদানে বিলম্ব হচ্ছে। সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
অন্যদিকে, রাজ্যের বাইরে থেকে অসমে অসমিয়া গামোছা আমদানির ব্যাপক আগ্রাসন রুখতে ভারত সরকারের বস্ত্রমন্ত্রক প্রণীত হ্যান্ডলুম (রিজার্ভ অফ আর্টিকল ফর প্রোডাকশন অ্যাক্ট ১৯৮৫) আইন কার্যকর করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
জেলাশাসক, পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয় তাঁত ও বস্ত্রশিল্প দফতরের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বহিঃরাজ্য থেকে আমদানিকৃত গামোছা বিক্রি বন্ধ করার জন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। পাওয়ারলুম উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে সংরক্ষিত তাঁতবস্ত্ৰ যাতে উৎপাদিত না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য বিভাগ নিয়মিত পরিদর্শনও করছে। মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন জেলায় মোট ১২ হাজার ৯৫৮টি গামোছা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আসাম সরকারের হস্ততাঁত ও বস্ত্র অধিকরণ, অসম বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও পরিবেশ পরিষদের (এএসটিইসি) সহযোগিতায় অসমিয়া গামোছায় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধনের কাজ গ্রহণ করেছে, যাতে বহিঃরাজ্য থেকে গামোছার আগ্রাসন রোধ করা যায়।
এদিকে, অধিকরণের একটি সংশোধিত আবেদন ইতিমধ্যে ১০ আগস্ট (২০২২) চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রি অফিসে পুনরায় জমা দেওয়া হয়েছে, জানান মন্ত্রী। ওই আবেদনে চলতি বছরের ১২ আগস্ট চেন্নাইয়ের জিআই রেজিস্ট্রিতে প্রকাশিত জার্নালে এই আবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে অসমিয়া গামোছার ভৌগোলিক নির্দেশক নিবন্ধনের বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া হস্ততাঁত ও বস্ত্রশিল্প বিভাগের অধীন তাঁত গবেষণা ও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্ৰে ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য চলতি বছরের বাজেটে ২৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। এর জন্য ইতিমধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, দেবব্রত শইকিয়ার প্রশ্নের জবাবে বলেন মন্ত্রী উৰ্খাও গৌরা ব্রহ্ম।

