বারাকপুর, ৪ সেপ্টেম্বর (হি.স. ) : চিটফান্ডের শিকড় খুঁজতে রবিবাসরীয় সকালে কাঁচরাপাড়ার বিভিন্ন প্রান্তে সিবিআইয়ের হানা। এদিন বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে সিবিআই হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা । কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের পৈতৃক বাড়িতেও চলে তল্লাশি । হালিশহর ও বীজপুর মিলিয়ে মোট ছয়টি জায়গায় অভিযান চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের।
চিটফান্ড মামলায় আরও তৎপর সিবিআই। হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি গ্রেফতারির পরই এবার সিবিআইয়ের নজরে তাঁর ঘনিষ্ঠরা।রবিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ হালিশহর, কাঁচরাপাড়ার বিভিন্ন প্রান্তে সিবিআইয়ের মোট ছ’টি দল পৌঁছয়। বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী এবং কাঁচরাপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারীর জেটিয়ার পৈতৃক বাড়িতে শুরু হয় তল্লাশি। বিধায়কের অফিসেও হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। সুবোধ এবং কমল দুই ভাই। জানা গিয়েছে, বীজপুরের বিধায়কের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল রাজু সাহানির। দীর্ঘদিনের ভাল বন্ধু দু’জনে। সে কারণেই রাজু গ্রেফতারির পর সুবোধ অধিকারীর বাড়িতে তল্লাশি চলছে বলেই দাবি খোদ বীজপুরের বিধায়কের। তবে তিনি কোনওভাবেই চিটফান্ড মামলার সঙ্গে যুক্ত নন বলেও দাবি তাঁর।
উল্লেখ্য, বর্ধমান সন্মার্গ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন নামে ওই চিটফান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় ২০১৪ সালে। কুলটি থানায় অভিযোগ জমা পড়েছিল। কোটি কোটি টাকা তছরূপের ঘটনায় ২০১৮ সালে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। চার্জশিটও জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত বছর ১২ ডিসেম্বর তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারও হন। যদিও বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। এই মামলাতেই এবার সিবিআইয়ের জালে রাজু।
হালিশহরের দাপুটে সিপিএম নেতা তথা কাউন্সিলর লক্ষ্মণ সাহানির ছেলে রাজু রাজু সাহানি লোহার ছাঁট এবং পাটের ব্যবসা করতেন। তবে মাত্র কয়েক বছরেই নাকি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান রাজু। হালিশহরে গঙ্গার ধারে হাইনেস্ট গেস্ট হাউস, নিউটাউনে ফ্ল্যাট এবং সিটি সেন্টারের কাছে বাড়িও রয়েছে। কীভাবে অল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন রাজু, তা খতিয়ে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা। শুক্রবার বাড়ি থেকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধারের পর রাজু সাহানিকে গ্রেফতার করে সিবিআই। রাতেই তাঁকে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। শনিবার আসানসোলের ফৌজদারি আদালতে তোলা হয় তাঁকে। ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও গ্রেফতারির পরেও রাজুর দাবি, তিনি কোনওভাবেই চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত নন ।