টেট মামলায় ২৬৯ জনের বাতিল চাকরি ফেরানোর আর্জি খারিজ, চলবে সিবিআই তদন্তই

কলকাতা, ২ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : টেট মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।

এর আগে এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। অর্থাৎ এই তদন্তে কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে হোক, তা চায়নি পর্ষদ। তাঁর সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল আগেই। স্থগিত ছিল রায়দান।

শুক্রবার সকালে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বহাল রাখল সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই। অর্থাৎ টেট দুর্নীতি মামলার তদন্ত করবে সিবিআই-ই। পাশাপাশি এদিন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অপসারণের সিদ্ধান্তও বহাল রাখা হল।

আদালত জানিয়ে দিল, যে ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করেছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের পুনর্বহাল করা যাবে না। একই সঙ্গে সিঙ্গলবেঞ্চ যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল তা বহাল রেখেই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আদালতের নজরদারিতে সিবিআই-ই এ ব্যাপারে তদন্ত করবে।

শুক্রবার সকাল এগারোটা নাগাদ ডিভশন বেঞ্চে রায় দানের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৮৫ পাতার রায় পড়তে শুরু করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের রায় বহাল রেখে তিনি জানান, একক বেঞ্চই তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে রিপোর্ট চাইতে পারবে। এমনকি, প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের আর্থিক দিকটিও দেখবে একক বেঞ্চই। ফলে টেট মামলার বিচার প্রক্রিয়া থাকবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নিয়ন্ত্রণেই।

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, এমনকি রাজ্য সরকারও। এ ছাড়া বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য-সহ যাঁদের পর্ষদের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল, তাঁরাও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন ডিভিশন বেঞ্চে।

টেট মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এ ছাড়া মানিকবাবুকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে অপসারণের নির্দেশও দেন তিনি। পাশাপাশি, মানিকবাবু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তির নথি চেয়েছিলেন বিচারপতি।

এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাটি ওঠে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। যার শুনানি গত ১৯ জুলাই শেষ হলেও রায়দান হয়নি। নির্দেশ স্থগিত রাখা ছিল। শুনানি শেষ হওয়ার এক মাস ১৪ দিন পর শুক্রবার রায় ঘোষণা করল ডিভিশন বেঞ্চ।

রায় ঘোষণার পর সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী জানিয়েছেন, এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। যেভাবে আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চলছিল, তেমনই চলবে এবং উচ্চ আদালতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর রিপোর্ট দিয়ে তদন্তের অগ্রগতি জানাতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *