নয়ডা, ২৮ আগস্ট ( হি.স.) : মাত্র বারো সেকেন্ডেই তাসের ঘরের মত গুঁড়িয়ে গেল নয়ডার টুইন টাওয়ার। ধুলোর ঝড় তুলে নিমেষে ধসে পড়ল একের পর এক তল। ন’বছরের আইনি লড়াইয়ের পর নিশ্চিহ্ন হল এই যমজ বিল্ডিং।
ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে রবিবার দুপুর আড়াইটেয় বাজল সাইরেন। এর পর শুরু কাউন্ট ডাউন। শূন্যে পৌঁছতেই ধুলোর মেঘ তুলে গায়েব হয়ে গেল জোড়া বহুতল।
গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জোড়া বহুতলের বিভিন্ন টাওয়ারে ঠাসা হয়েছিল ৩,৭০০ কেজির বিস্ফোরক। তা দিয়েই উড়িয়ে দেওয়া হল অ্যাপেক্স এবং সিয়েন— সুপারটেকের দুই বহুতল। পলকেই অ্যাপেক্সের ৩২তলার সঙ্গে মিলিয়ে গেল সিয়েনের ২৯ তলা। মোট ১০০০ ফ্ল্যাটের জোড়া বহুতল।
রবিবারের এই চরম মুহূর্তকে পরিণতি দিতে প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে। জোড়া বহুতল ভাঙার আগে থেকে এবং পরে, সওয়া ২টো থেকে ২টো ৪৫ মিনিট পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে। ছিল ৫০০ পুলিশকর্মীর কড়া পাহারা।
বিস্ফোরণের পর নয়ডার আকাশ ঢাকা পড়েছিল ধুলোর চাদরে। ধুলোর ঝ়ড়ে আশপাশের দৃশ্যমানতা কমে যায়। বিস্ফোরণের প্রস্তুতি হিসাবে আগে থেকেই জোড়া বহুতলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আশপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদেরও।
এই জোড়া বিল্ডিং ঘিরে বিতর্ক কম ছিল না। ১৪টি টাওয়ার-সহ ন’টি তলার নকশায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই নকশায় বদল ঘটিয়ে প্রতিটি তলে ৪০টি করে ফ্ল্যাট গড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। যদিও অভিযোগ ওঠে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (এনবিসি)-এর নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এর নির্মাণ করা হয়েছে। একটি টাওয়ার থেকে অন্যটির দূরত্ব কমপক্ষে ১৬ মিটারের বদল ৯ মিটারেরও কম।
এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমার জল গড়ায় এলাহাবাদ হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। চলতি বছরের ১২ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলতে হবে। তা-ই পরিণতি পেল রবিবার।

