আগরতলা, ২২ আগস্ট (হি. স.) : ত্রিপুরায় সিপিএমকে সহায়তায় “কংগ্রেস পার্টি” এবং “রাষ্ট্রপতির শাসন”। আজ সোমবার ত্রিপুরায় বিজেপি নেতা তথা তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এই তির্যক মন্তব্য করেছেন। মূলত, রবিবার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানিয়েছিলেন। তারই পাল্টা হিসেবে কংগ্রেস-সিপিএমকে এক আসনে বসিয়ে বিঁধল বিজেপি।
সোমবার বিকেলে আগরতলায় বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীচৌধুরী বলেন, “যখন ত্রিপুরায় ২৫ বছর ধরে কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় ছিলেন, কংগ্রেসের এই নেতারা কখনও দিল্লিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেননি। অথচ আজ মাত্র সাড়ে চার বছরের পুরনো সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে দিল্লিতে বসে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি করেছে।”
তাঁর কটাক্ষ, ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসন কংগ্রেসের জন্য নতুন কিছু নয়। ১৯৯৩ সালে রাষ্ট্রপতি শাসনের মাধ্যমে কংগ্রেস সিপিআইএমকে ক্ষমতায় আসতে এবং বামপন্থী সরকার গঠনে সহায়তা করেছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতির শাসন কার্যকর করেছিলেন এবং দুই-তিন মাস পর নির্বাচন হয়েছিল এবং সিপিআইএম-এর নেতৃত্বে বামপন্থীদের সরকার গঠনে সহায়তা করেছিল।
তিনি বিদ্রুপের সুরে বলেন, সেই কংগ্রেসই এখন আবার রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাচ্ছে। কংগ্রেস দল এবং রাষ্ট্রপতির শাসন সমার্থক শব্দ। তারা জানে এই পথ দিয়ে তাদের কমিউনিস্ট বন্ধুদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যেতে পারে। কংগ্রেস পার্টি তাদের নিজের হাতে ক্ষমতা কমিউনিস্ট দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে”, যোগ করেন তিনি।
শ্রীচৌধুরীর বক্তব্য, ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। বিরোধী দল যারা ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে, তারা গভীর ষড়যন্ত্র করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য অক্লান্ত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। আর এরই অংশ হিসেবে আমরা দেখেছি যে কংগ্রেস নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে।
তিনি বলেন, এখানে যারা এই রাজ্যকে ভালোবাসে এবং সম্মান করে, যারা সমগ্র উত্তর-পূর্ব অঞ্চল এবং ভারতে ‘এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা’ সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে চায়, ঠিক সেই জায়গায় এবং সেই সময়ে কংগ্রেস পার্টি একটি নেতিবাচক প্রচারের মাধ্যমে সারাদেশে বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তাঁর কটাক্ষ, যখনই কংগ্রেস বা সিপিআইএম সাংবাদিক সম্মেলন করে, তাঁরা একই সুরে অভিযোগ তুলে। কারণ, কংগ্রেস ও সিপিআইএম একে অপরকে সমর্থন করে। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারছে না, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও দ্বারা পরিচালিত হয় না। এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার পরিচালিত হচ্ছে, সতর্ক করে বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “কংগ্রেস নেতারা ভুলে গেছেন ত্রিপুরায় সিপিআইএম-এর নেতৃত্বাধীন বামপন্থী শাসনামলে বিপুল সংখ্যক কংগ্রেস কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি বিদ্রুপের সুরে বলেন, কংগ্রেস ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবির মাধ্যমে কমিউনিস্টদের সাহায্য করার জন্য দিবাস্বপ্ন দেখছে।কংগ্রেস এবং সিপিআইএম-এর প্রত্যেকেরই ধারণা যে তারা একে অপরের সাহায্য ছাড়া ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যেভাবে কংগ্রেস ও সিপিআইএম-এর অনৈতিক জোটের জবাব দিয়েছে, ত্রিপুরার মানুষও তাদের জবাব দিতে প্রস্তুত। সিপিআইএম এবং কংগ্রেস শাসনামলেও একই সংস্কৃতি অব্যাহত ছিল, কটাক্ষ করে বলেন তিনি।

