BRAKING NEWS

ডিমা হাসাওয়ে অধিকার আদায়ে লড়াই করতে ভয় করে মানুষ : অসম টিএমসির নেতা সেথমিনথাং

হাফলং (অসম), ১১ আগস্ট (হি.স.) : স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি পালন করছে ভারত। কিন্তু ডিমা হাসাও জেলা স্বাধীনতা লাভ করেনি এখনও। এখানে নিজের অধিকার আদায়ে লড়াই করতে ভয় করে মানুষ, মন্তব্য অসম প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক সেথমিনথাং খংসাইয়ের।

আজ বৃহস্পতিবার হাফলঙে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে খর্গহস্ত হয়ে ওঠে সেথমিনথাং বলেন, বিজেপির সময়েই ডিমা হাসাও জেলায় সিন্ডিকেটরাজ ও গুণ্ডারাজ কায়েম হয়েছে। এই বিজেপি সরকারের আমলেই কর্মচারীরা তাদের বেতন থেকে বঞ্চিত। তিনি বলেন, হাফলং পুরবোর্ডের কর্মচারী ও উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের কর্মচারীদের বেতন সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস পার্বত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষকে এক স্মারকপত্র দিয়েছে। এর পর উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষ বেতন প্রদান করার কথা ঘোষণা করে যদিও হাফলং পুরবোর্ডের কর্মচারীদের ১৮ মাসের বকেয়ার মাত্র তিন মাসে এবং উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদের কর্মচারীদের সাত মাসের মধ্যে দু মাসের বকেয়া প্রদান করার আশ্বাস দিয়েছে পার্বত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষ। বাকি বকেয়া পুজোর আগে প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে পরিষদ কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু পুজোর আগে বেতন মিটিয়ে দিতে টাকা কোথা থেকে আসবে জানতে চেয়েছেন অসম প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক সেথমিনথাং খংসাই। তিনি বলেন, আগে মাসের প্রথম সপ্তাহেই পার্বত্য পরিষদের কর্মচারীরা বেতন পেয়ে যেতেন। কিন্তু বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকারের সব-কা সাথ সব-কা বিকাশ স্লোগান নিয়ে ক্ষমতায় আসার পর সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, পার্বত্য পরিষদের কর্মচারীদের বেতন মিটিয়ে দিতে বছরে ৭২ কোটি টাকার প্রয়োজন। অথচ পার্বত্য পরিষদে বছরে রাজস্ব সংগ্রহ হয় ৩৫ কোটি টাকা।

সেথমিনথাংয়ের অভিযোগ, হাফলং শহরে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য রাজস্ব সংগ্রহ করা হয় বাজার থেকে। কিন্তু এই রাজস্ব সংগ্রহের জন্য বিজেপি নেতাদের লিজ দেওয়া হয়েছে। আর এই লিজ গ্রহীতা নেতারা গত দু-তিন বছরের রাজস্ব হাফলং পুরবোর্ডে জমা দেননি। সেথমিনথাং খংসাইয়ের প্রশ্ন, এ সব রাজস্ব কোথায় যাচ্ছে বা চুরি হচ্ছে এ সম্পর্কে পদক্ষেপ নিতে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য ও হাফলং পুরবোর্ডের চেয়ারম্যানে কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সেফমিনথাং আরও বলেন, ষষ্ঠ তফশিলির অধীনে উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদকে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে ষষ্ঠ তফশিলির ক্ষমতা হ্রাস করার চেষ্টা করছে সরকার। তিনি বলেন, হাফলং মাহুর মাইবাং হারাঙ্গাজাও আগে টাউন কমিটি ছিল, এখন পুরবোর্ড করা হয়েছে। কিন্তু পুরবোর্ড করার পর এতে লাভ কী হয়েছে, প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, এই বিজেপি সরকার পর্যটনের ক্ষেত্রে বা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পাশাপাশি উৎসবের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। ডিমা হাসাও জেলাকে পর্যটনের ক্ষেত্রে উন্নত করতে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করছে। ফ্যালকন মহোৎসবের জন্য সবাই উমরাংসোকে জানতে পেরেছে।

অথচ এই উমরাংসোর পথঘাটের অবস্থা বর্তমানে শোচনীয়, এই অভিযোগ উত্থাপন করে সেথমিনথাং বলেন, এই সব উৎসব থেকে কত টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে তা জনসমক্ষে তুলে ধরা উচিত। অসম প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক বলেন, আমরা সবসময় কর্মচারীদের সঙ্গে রয়েছি এবং পার্বত্য পরিষদ কর্তৃপক্ষকে কর্মচারীদের বেতন যেমন করেই হোক মিটিয়ে দিতে হবে না হলে তৃণমূল কংগ্রেস পথে নেমে আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে, বলেন সেথমিনথাং খংসাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *