আগরতলা, ১১ আগস্ট : হস্ততাঁত শিল্প এক ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এই শিল্প ইতিহাসের এক বহমান ধারা। একটি জাতির সংস্কৃতিকে এই শিল্প যুগ যুগ ধরে বহন করে চলছে। আজ আগরতলার পূর্বাশা আরবান হাট প্রাঙ্গণে জাতীয় হস্ততাঁত শিল্প দিবস উপলক্ষে ৪ দিনব্যাপী আয়োজিত হস্ততাঁত শিল্পমেলার উদ্বোধন করে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা একথা বলেন। তিনি বলেন, সারা দেশের মতো আমাদের রাজ্যেও দক্ষ হস্ততাঁত শিল্পী রয়েছেন। যারা এ রাজ্যের জনজাতি ও বাঙালি উভয় অংশের মানুষের বস্ত্র তৈরিতে দক্ষ। কিন্তু এতদিন এই শিল্প ও শিল্পীদের বিশেষ পরিচর্যা করা হয়নি। তাই এই শিল্প অনেকটাই বাজারহীন হয়ে পড়েছিল। বর্তমান সরকার এই শিল্পকে জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টা নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, হস্ততাঁত শিল্প ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের একটি বিশেষ ক্ষেত্র। সমাজের অর্ধেক অংশ মা বোনেদের এই শিল্পকর্মে বেশি করে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এই কাজের শিল্পীদেরও বিশেষ মর্যাদা দিতে হবে। কারণ এই শিল্পীরাই ত্রিপুরাকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। জাতীয় হস্ততাঁত দিবস উপলক্ষে নাবার্ড এখানে যে হস্ততাঁত শিল্প মেলার আয়োজন করেছে এজন্য উপমুখ্যমন্ত্রী নাবার্ড কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ত্রিপুরায় এই শিল্পের বিকাশের বিশেষ সম্ভাবনা রয়েছে। নাবার্ড এ রাজ্যের গ্রাম ও গ্রামীণ মানুষের উন্নয়নে অনেক কাজ করছে। ভবিষ্যতে আরও কাজ করবে। তিনি নাবার্ডকে এ রাজ্যের হস্ততাঁত শিল্পীদের পাশে থেকে তাদের স্বরোজগারী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, এজন্য সরকার প্রয়োজনীয় সবরকম সহায়তা করবে।
নাবার্ডের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা রাজ্য কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ভজনচন্দ্র রায়, স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির কনভেনার আনন্দ কুমার, ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সত্যেন্দ্র সিং এবং ত্রিপুরা হস্ততাঁত ও কারুশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বলাই গোস্বামী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাবার্ডের জেনারেল ম্যানেজার লোকেন দাস ও সহকারি জেনারেল ম্যানেজার রীতা চৌধুরী। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন নাবার্ডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অনিল পুরোহিত। অনুষ্ঠানে নাবার্ডের পক্ষ থেকে ছটমনি বাদল, পান্থবী ও রাধারাণী এই তিনটি স্বসহায়ক দলকে হস্ততাঁত শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। অন্যদিকে, সীমা দেবনাথ, শিপ্রা দেবনাথ ও শিবানী দেবনাথকে এই শিল্পে বিশেষ দক্ষ কর্মী হিসেবেও পুরস্কৃত করা হয়। উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা শিল্পীদের হাতে এই পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেন।

