অসমের মৈরাবাড়িতে গ্রেফতার জেহাদির লিংকম্যান মুফতি, সিল জমি-উল হুদা মাদ্ৰাসা

মরিগাঁও (অসম), ২৮ জুলাই (হি.স.) : অসমের মরিগাঁও জেলার অন্তর্গত মৈরাবাড়িতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে জিহাদির লিংকম্যান মুফতি মুস্তাফাকে। সেই সঙ্গে সিল করা হয়েছে মুফতির মাধ্যমে জিহাদি টাকায় পরিচালিত জমি-উল হুদা মাদ্ৰাসাকে। ওই মাদ্রাসা থেকে বাংলাদেশ-যোগ, টাকার লেনদেন এবং জিহাদ-সম্পর্কিত বহু নথিপত্রও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

গতকাল বঙাইগাঁও পুলিশ গোয়ালপাড়া জেলার পাখিউরাও গ্রামের জনৈক আব্বাস আলিকে বাংলাদেশের আনসারউল্লা বাংলা টিম-এর জিহাদি অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল। তাকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল রাত থেকে মরিগাঁওয়ের বিভিন্ন মাদ্রাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। মূলত বাংলাদেশি জিহাদি ফেরার মেহবুবের খোঁজে পুলিশের দল অভিযান চালিয়েছে।

ধৃত জেহাদি আব্বাস আলির ঘরে বাংলাদেশের বাসিন্দা জনৈক মেহবুব নামের ব্যক্তি আনসারউল্লা বাংলা টিম-এর জিহাদি সদস্য অবস্থান করে অসমে তাদের সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সে দুৰ্ধৰ্ষ বাংলাদেশি জেহাদিকে থাকা-খাওয়া, বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেওয়া ছাড়াও মোবাইল ফোনের সিম জোগাড় করে দিয়েছিল। পুলিশি জেরায় বঙাইগাঁওয়ে গ্রেফতার আব্বাস আলি নাকি বলেছিল, মেহবুব নামের জিহাদি মৈরাবাড়ির জমি-উল হুদা মাদ্ৰাসায় রয়েছে। ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আজ ভোরে মুফতি মুস্তাফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের হাতে ইতিমধ্যে মাদ্রাসা থেকে জিহাদিরা তাদের সাংগঠনিক কার্যকলাপ বিস্তার করছে বলে প্রমাণ এসে গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মরিগাঁও জেলার প্রায় সাতটি মাদ্রাসায় পুলিশ অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ।
পুলিশের জনৈক পদস্থ আধিকারিক এই তথ্য দিয়ে জানান, মুফতি মুস্তাফাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি তার দ্বারা পরিচালিত জমি-উল হুদা মাদ্ৰাসাকে সিল করা হয়েছে। ওই মাদ্রাসা থেকে জিহাদ-সম্পর্কিত বহু নথিপত্রও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তিনি জানান, মাদ্রাসাটি জিহাদি সংগঠনের টাকায় চলত। জমি-উল হুদা মাদ্ৰাসায় মুফতি মুস্তাফার হেফাজত থেকে তার নামে ব্যাংকের পাসবুক, সিম সহ মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেট, টাকার লেনদেন ইত্যাদি বহু প্রামাণিক নথি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে আগত জিহাদিদের ভারতীয় সিমকাৰ্ডও হস্তান্তর করত মুফতি মুস্তাফা।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, জেহাদি মেহবুব রজ্যের বিভিন্ন স্থান যেমন বরপেটা, বঙাইগাঁও, গোয়ালপাড়া, নগাঁও, মরিগাঁও ইত্যাদি জেলার যুবকদের সাংগঠনিক প্ৰশিক্ষণ দিচ্ছিল। এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর গত এপ্ৰিল মাসে যোগীঘোপা থানায় ৫৬/২২ নম্বরে মামলা রুজু করে জেলার আটজনকে গ্ৰেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে গত ৭ জুলাই বরপেটায় বিস্ফোরক সহ জামাত-উল মুজাহিদিন বাংলাদেশ সংক্ষেপে জেএমবি-র দুই জিহাদিকে গ্ৰেফতার করেছিল পুলিশ৷ ধৃত দুজনকে উত্তর কালঝাড়ের বাসিন্দা মকদ্দস আলি আহমেদ এবং জনিয়ার সফিকুল ইসলাম বলে পরিচয় পাওয়া গেছে৷ তাছাড়া কেবল বরপেটা জেলায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত ১৯, বঙাইগাঁও জেলায় ১২ এবং ত্রিপুরা থেকে তিন জিহাদিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর৷
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, গত ১ জুলাই গুয়াহাটির দিশপুর গেস্ট হাউসের ম্যানেজার ইনামুল হক, ৪ এপ্রিল ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার যাত্রাপুর থানাধীন এলাকা থেকে ইমরান হুসেন (২৪), হামিদ আলি (৩৪) এবং আবুল কাসেম (৩২)- নামের তিন জেএমবি ক্যাডারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *