আগরতলা, ৫ জুলাই (হি. স.) : কবরস্থান দখলের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় আগরতলায় নন্দননগর পাল পাড়া এলাকায়। উত্তেজিত সংখ্যালঘু অংশের মানুষ রাস্তা অবরোধ করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদর মহকুমা প্রশাসন কবরস্থান দখলমুক্ত করেছে এবং এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির আদেশ দিয়েছে।
গতকাল রাতে নন্দননগর পাল পাড়া এলাকায় কবরস্থানের জমিতে হিন্দু যুব বাহিনী ত্রিপুরা প্রদেশ ব্যানারে শিব লিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছে এবং সেখানে অস্থায়ী মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। তাতে, সংখ্যালঘু অংশের মানুষ প্রচন্ড ক্ষেপে যান। আজ সকালে বিষয়টি নজরে আসতেই তাঁরা ক্ষোভে ফেঁটে পড়েন। তাঁরা ওই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করেন।
এ-বিষয়ে নুর ইসলাম খান বলেন, ভূমিদস্যুরা কবরস্থান দখলের চেষ্টা করছে। তাঁরাই এলাকায় শান্তি সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হোক চাইছে। তাঁর দাবি, সংখ্যালঘু অংশের মানুষের জন্য ওই জমি হস্তান্তর করার জন্য কয়েক বছর ধরেই প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু, এ-বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি আজও।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালে সদর ডিসিএম, ২০২০ সালে সদর এসডিএম এবং তারপর সংখ্যালঘু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রীর কাছেও জমি হস্তান্তর চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। এমনকি, ওয়াকফ বোর্ডকেও এ-বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। কিন্তু, এখনো সেই আর্জি ঝুলে রয়েছে। তাঁর দাবি, গতকাল রাতে ড্রজার দিয়ে কবরস্থানে মাটি ভরাট করা হয়েছে। কবরস্থানে শিব লিঙ্গ বসিয়ে অস্থায়ী মন্দির বানানো হয়েছে। এরই প্রতিবাদে আজ রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে, বলেন তিনি।
তাঁর আরও দাবি, এলাকায় শান্তি সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করার জন্যই ওই কাজ করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার জন্য ভূমিদস্যুরা হিন্দু যুব বাহিনী ত্রিপুরা প্রদেশের ব্যানারে ওই কাজ করেছে। এদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ওই জমি সংখ্যালঘু অংশের মানুষ দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৬৪ সালে জমি বিনিময় হয়েছে। তাতে ওই জমি হিন্দুদের, তার নথিও রয়েছে। কিন্ত, এখন সংখ্যালঘু অংশের মানুষ ওই জমিও দখল করতে চাইছেন। তাই, সেখানে শিব লিঙ্গ স্থাপন অস্থায়ী মন্দির বানানো হয়েছে।
ওই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় তীব্র অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। খবর পেয়ে সদর মহকুমা প্রশাসন কবরস্থান থেকে অস্থায়ী মন্দির সরিয়েছে এবং এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির আদেশ জারি করেছে। এরপরই রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার হয়েছে।এদিকে, হিন্দু যুব বাহিনী ত্রিপুরা প্রদেশের তরফে জানানো হয়েছে, কবরস্থানে শিব লিঙ্গ বসানো এবং অস্থায়ী মন্দির নির্মাণের সাথে সংগঠনের কোন যোগসূত্র নেই। ওই ঘটনায় যুক্তদের সাথে এক বছর আগেই সংগঠন সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এবং ত্রিপুরায় সাংগঠনিক কার্যকর্ম বন্ধ রেখেছে।