বরপেটা (অসম), ২৬ এপ্রিল (হি.স.) : গুজরাটের নির্দলীয় বিধায়ক জিগনেস মেভানিকে এবার পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন বরপেটার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম)। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কোকরাঝাড়ের সিজেএম এক মামলায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। কিন্তু বরপেটা থানায় রুজু আরেক মামলায় কোকরাঝাড় আদালতেই বিধায়ক জিগনেশ মেভানিকে গ্রেফতার করে নিজেদের জিম্মায় নেয় বরপেটা পুলিশ৷
কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আজ সকালে কোকরাঝাড় কারাগার থেকে সরাসরি দুপুরের দিকে বিধায়ক জিগনেশ মেভানিকে বরপেটার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার শুনানিকালে জিজ্ঞসাবাদের জন্য পুলিশ মেভানিকে সাতদিন রিমান্ডে চায়। কিন্তু আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
জানা গেছে, কংগ্ৰেস সমর্থিত নির্দলীয় বিধায়ক জিগনেশ মেভানির বিরুদ্ধে একজন সরকারি কর্মচারী এবং মহিলা পুলিশ আধিকারিকের শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত ২১ এপ্রিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪/৩২৩/৩৫৩/৩৫৪ ধারায় ৮১/২০২২ নম্বরে বরপেটা থানায় মামলা রুজু হয়েছিল।
এদিকে গোয়ালপাড়া থানায়ও জিগনেশ মেভানির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা রুজু হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ আদালতে প্ৰবেশের সময় উপস্থিতি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিধায়ক জিগনেশ বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি সরকার এবং আরএসএস ষড়যন্ত্ৰ রচনা করেছে। তবে তিনি কোনও অবস্থাতেই মাথা নত করবেন না, লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ২০ এপ্রিল রাত প্রায় ১১.৩০ মিনিটে গুজরাটের পালনপুর সাৰ্কিট হাউস থেকে কংগ্ৰেস সমৰ্থিত নিৰ্দলীয় বিধায়ক জিগনেস মেভানিকে গ্ৰেফতার করেছিল অসমের কোকরাঝাড় থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ১৮ এপ্ৰিল বিধায়ক মেভানি তাঁর ট্যুইটার হ্যান্ডলে লিখেছিলেন, ‘‘ভারতের প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদী ‘গডসে’কে ঈশ্বর জ্ঞানে উপাসনা করেন। তাই তিনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) দেশের উদ্দেশ্যে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করবেন না। ২০ এপ্ৰিল গুজরাট সফরে আগত প্ৰধানমন্ত্ৰীকে আবেদন জানাচ্ছি, হিম্মতনগর, খাম্বাট এবং ভেরাভালের মতো সাম্প্ৰদায়িক হিংসাজর্জরিত এলাকাগুলিতে শান্তি ও সম্প্ৰীতি বজায় রাখতে তিনি যেন জনসাধারণের প্রতি আবেদন জানান।”
তাঁর এই মন্তব্যের জন্য কোকরাঝাড় জেলার ভবানীপুরের বাসিন্দা বিজেপি নেতা জনৈক অনুপ কুমার দে অসমের কোকরাঝাড় সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগানোর অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কোকরাঝাড় থানায় বিধায়ক মেভানির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ১৫৩(এ) (দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা প্রচার করা), ২৯৫ (এ), ৫০৪, ৫০৫(এ)(বি) এবং আইটি আইনের ৬৬ ধারায় ১৮৩/২০২২ নম্বরে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। রুজুকৃত মামলার ভিত্তিতেই গত ২০ তারিখ তাঁকে গুজরাটের বনাসকান্থা জেলার পালনপুর সার্কিট হাউস থেকে কোকরাঝাড় পুলিশ গ্ৰেফতার করে।
এদিকে আজ জিগনেশ মেবানির নিঃশর্তে মুক্তির দাবিতে বরপেটায় সিপিআইএম এবং কংগ্রেস বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে৷ জিগনেশ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্ৰের বলি হয়েছেন বলে দাবি করেছেন কংগ্রেসি সাংসদ আব্দুল খালেক৷