ক্রীড়া প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ এপ্রিল।। আবারও দাপট দেখালো মেট্রিক্স চেস আকাদেমির দাবাড়ুরা। অনূর্ধ্ব-১০,১২ এবং ১৮ বিভাগের পর এবার অনূর্ধ্ব-৮ বিভাগেও দাপট অব্যহত রাখলো আগরতলার মেট্রিক্স চেস আকাদেমি। ওই আসরে বালক বিভাগে মেট্রিক্স চেস আকাদেমির রোদ্র মজুমদার এবং বালিকা বিভাগে মেট্রিক্স চেস আকাদেমির আরাধ্যা দাস রাজ্য সেরা হয়েছে। রবিবার এন এস আর সি সি-র দাবা হল ঘরে হয় আসর। তাতে বালক বিভাগে ১৬ জন এবং বালিকা বিভাগে ৬ জন দাবাড়ু অংশ নিয়েছিলো।
সম্ভবত ত্রিপুরার দাবার ইতিহাসে এবারই প্রথম অভিভাবকদের রোষানলে পড়লো রাজ্য দাবা সংস্থার কর্তারা। এদিন আসর শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠে অনভিজ্ঞ আরবিটর বিনয় সিনহার উপর। নিজের আকাদেমির দাবাড়ুদের সুবিধে পাইয়ে দিতে কোমর বেধে নেমেছিলেন তিনি। যা চাক্ষুস করেন রাজ্য দাবা সংস্থার কর্তারাও। নিয়মানুযায়ি একটি ম্যাচে কোনও দাবাড়ু দুই বার ভুল চাল দিলে তাকে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়।
এদিন ওই নিয়মের কার্যত শ্রাদ্ধ করেন ওই ‘গুনধর’ আরবিটর। নিজের আকাদেমির দাবাড়ুদের বিরুদ্ধে অন্য দাবাড়ুরা দুটি ভুল করলেই ওই দাবাড়ুকে পরাজিত করে দেন। অথচ নিজের আকাদেমির দাবাড়ুরা ভুল করলে তা তিনি এড়িয়া যায়। এনিয়ে শুরু থেকেই ক্ষেপে থাকেন অভিভাবকরা। শেষে এনিয়ে রাজ্য সংস্থার যুগ্ম সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান অভিভাবকরা। আর এর প্রতিলিপি ক্রীড়ামন্ত্রী সহ রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদের যুগ্ম সচিবের কাছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিলোনিয়া থেকে ছেলেকে খেলতে নিয়ে আসা উত্তরা দাস সরাসরি অভিযোগ করেন ওই অজ্ঞ আরবিটরের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন,”এদিন শুরু থেকেই ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে আসছেন ওই আরবিটরটি। এভাবে চলতে থাকলে আর ছেলেকে নিয়ে খেলতে আসবো না। এতো টাকা খরচ করে আগরতলা খেলতে এসে যদি কারচুপির স্বীকার হই তাহলে ছেলের না খেলাই ভালো”। অনেকেই আবার রাজ্য দাবা সংস্থার কর্তাদের দিকেও আঙ্গুল তুলেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, কেনও ওই অনভিজ্ঞ আরবিটরকে দিয়ে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? যে শুধু নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বুঝেন না। এর আগেও অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগের আসরে ওই গুনধর আরবিটর অনেকরকম ঝামেলা করেছিলেন। নিয়ম না জেনে ৪ রাউন্ডের আসর করে ৩ রাউন্ডেই শেষ করে দিয়েছিলেন। এনিয়েও বেজায় চাপে পড়েছিলো রাজ্য সংস্থার কর্তারা। শুধু তাই নয়, রাজ্য সংস্থার যুগ্ম সচিবের মেয়ে এদিন আসরে খেলেছিলো। তাহলে যুগ্ম সচিব কীভাবে খেলা চালাকালিন খেলার ঘরে থাকলেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা? এদিকে এদিনের আসর বালক বিভাগে ৪ রাউন্ডে পুরো ৪ পয়েন্ট পেয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেট্রিক্স চেস আকাদেমির রোদ্র মজুমদার। ওই বিভাগে সাড়ে ৩ পয়েন্ট পেয়ে অভ্রনীল দে দ্বিতীয় এবং অদ্রুষ কর্মকার তৃতীয় স্থান দখল করে। বালিকা বিভাগে আসরে অংশ নেয় ৬ জন দাবাড়ু। আসরে ৩ রাউন্ডে পুরো ৩ পয়েন্ট নিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেট্রিক্স চেস আকাদেমির আরাধ্যা দাস। ওই বিভাগে ২ পয়েন্ট পেয়ে ভোকলসে এগিয়ে থেকে অদ্রিজা সাহা দ্বিতীয়, মেট্রিক্স চেস আকাদেমির শ্রেয়ভী কর তৃতীয় এবং মেট্রিক্স চেস আকাদেমির নাভ্যা দে চতুর্থ স্থান দখল করে।