BRAKING NEWS

Deputy Chief Minister : ভারত-বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের উদ্বোধন, পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে : উপমুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১৭ এপ্রিল : পর্যটন শিল্প শুধু বিনোদনের জন্যই নয়, শিক্ষার প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে করে৷ রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে৷ পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে৷ রাজধানীর উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে আজ সন্ধ্যায় ভারত-বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের উদ্বোধন করে একথা বলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই পর্যটন উৎসব শেষ হবে আগামী ১৯ এপ্রিল৷ তিনদিনের এই উৎসবে সাংস্ক’তিক কর্মসূচি ছাড়াও রয়েছে আরও বিভিন্ন কর্মসূচি৷

উদ্বোধকের বক্তব্যে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরার সাথে সবদিক দিয়ে বাংলাদেশের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে৷ সাংস্কৃতিক কিংবা সংগীত ছাড়াও ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মানুষের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে৷ বর্তমান সরকার ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে চায়৷ ত্রিপুরাতে ভ্রমণ পিপাসুুদের জন্য অনেক জায়গা রয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে ছবিমুড়া, জম্পই হিল সহ রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেন উপমুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বিশেষভাবে দু’দেশের মধ্যে মানুষে মানুষে সম্পর্কের উন্নতির কথা তুলে ধরেন৷ ভৌগলিক দিক দিয়েই নয়, বাংলাদেশের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে ত্রিপুরার৷ মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার জনসাধারণের বিশাল ভূমিকা ছিল৷ তিনি বলেন, এই রাজ্য ছোট হলেও মানুষের মনটা বিশাল৷ আগামীতেও ত্রিপুরায় বাংলাদেশের মানুষকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি৷ ত্রিপুরায় শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে তার আহ্বান জানান উপমুখ্যমন্ত্রী৷

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করে পর্যটনমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, ভারতবর্ষ বহু সংস্কৃতি ভাবাপন্ন মানুষের দেশ৷ এই দেশ কৃষ্টি এবং সংস্কৃতির পরম্পরা নিয়ে চলছে৷ বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রের অর্থনীতি পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে চলছে৷ আগামী কিছু দিনের মধ্যে ত্রিপুরাতে নারকেলকু’ একটি অন্যতম আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হতে চলেছে৷ ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সেখানে হ্যালিপেডের উদ্বোধন হয়েছে৷ এর পাশাপাশি আগামীতে সাবমের ফেনী নদীর বীজ বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার সংযুক্তি করতে চলেছে৷ এর মধ্যদিয়ে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে৷ এতে শুধু ত্রিপুরা নয় বাংলাদেশও লাভবান হবে৷ এছাড়া দাউদকান্দি দিয়ে ত্রিপুরার সাথে যুক্ত হতে চলেছে বাংলাদেশ৷ আখাউড়া নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত দিয়েও দু’দেশের মধ্যে রেল পরিষেবার সংযোগ হতে চলেছে৷

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের সাংসদ তথা কমটি অন এস্টিমেইটসের চেয়ারম্যান ড. মহম্মদ আব্দুস সহিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার মানুষের সার্বিক সহায়তার কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন৷ তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে৷ এই উৎসব দু’দেশের মধ্যে সম্পীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুুদৃঢ় করবে৷ তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও পর্যটন শিল্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজমদার বলেন, ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের আত্মিক যোগাযোগ রয়েছে৷ পর্যটন শুধু আর্থিক দিক থেকে নয়, সংস্কৃতিও বিকশিত করে৷ এর মধ্যমে সংস্কৃতির নিজস্বতা আরও পরিব্যপ্ত হয়৷ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্কৃতির সুুফলও তৈরি হয়৷ এর মধ্যদিয়ে এই রাজ্যের কৃষ্টি সংস্কৃতিকে বিদেশেও তুলে ধরা সম্ভব হবে৷ রাজ্য সরকারও পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরার জন্য যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷

তিন দিনব্যাপী ভারত-বাংলাদেশ পর্যটন উৎসবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গল উপজেলার চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, ত্রিপুরা পর্যটন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, বাংলাদেশের আগরতলাস্থিত এসিস্টেন্ট হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন মন্ত্রকের আঞ্চলিক অধিকর্তা শঙ্খ শুভ্র দেববর্মণ সহ বিশিষ্ট জনেরা৷

এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের এক প্রতিনিধিদল সহ পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ট্যুর অপারেটরগন৷ এছাড়া অংশ নিয়েছেন হোটেল মালিক, পর্যটন আধিকারিক, স্বাধীনতা সংগ্রামী, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রকমারি খাদ্য উৎসবের আয়োজন করা হয়৷ আগামীকাল বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখানো হবে৷ ১৯ এপ্রিল শেষ দিনে গীতাঞ্জলি পর্যটন আবাসের মিলনায়তনে দু’দেশের পর্যটন বিষয়ক আদান প্রদানের ও ব্যবসায়িক বিষয়াদি নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে মতবিনিময় সভা৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *