Maoist : ফের মাওবাদী আতঙ্ক জঙ্গলমহল জুড়ে, গোয়েন্দা রিপোর্ট

বাঁকুড়া, ১৭ এপ্রিল (হি.স.) : জঙ্গলমহল এলাকায় ফের মাওবাদী আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মাওবাদীরা ফের সক্রিয় জঙ্গল মহলে,এরকম গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে এমনটাই বেশ কয়েকমাস ধরে। জেলার জঙ্গল মহলের রানীবাঁধ, রাইপুর, ঝিলিমিলি বারিকূল এর মতো মাও প্রভাবিত এলাকায় নাকা চেকিং থেকে শুরু করে পুলিশি নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। তারই মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম সফর সেরে রবিবার বাঁকুড়ায় এসেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। এদিন বেলা এগারোটা নাগাদ বাঁকুড়া পুলিশ লাইনে পৌঁছান তিনি। ভার্চুয়াল মোডে বিষ্ণুপুর থানার নবনির্মীত ভবনের উদ্বোধন করেন। বাঁকুড়া পুলিশ লাইনের সভাঘরে পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে জেলার মাওবাদী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন।এতেই মাও প্রভাব বেড়ে চলার জল্পনা আরও জোরদার হয়েছে। দুপুরেই ডিজি রওনা দেন পুরুলিয়ার উদ্যেশ্যে।

এদিকে রানীবাঁধের বারিকূলে পুলিশি নজরদারি অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। বারিকূলের সীমান্ত এলাকা ঝিলিমিলি ও ফুলকুশমায় নাগাচেকিং জোরদার করা হয়েছে।সারেঙ্গা, সিমলাপাল সহ জঙ্গলমহল জুড়ে গাড়ি আটকে তল্লাশিও করা হচ্ছে।এজন্য জঙ্গলমহল এলাকায় কর্মরত পুলিশের আগামী পনেরো দিন ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জঙ্গল মহলজুড়ে হাই এলার্ট জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে রাজ্য পুলিশ কে সর্তক করা হয়েছে যে, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জঙ্গলমহলে কোন বড় ধরণের নাশকতার ঘটাতে পারে মাওবাদীরা ।তাই জঙ্গলমহল এলাকা নিরাপত্তা মুড়ে ফেলা হয়েছে। তাই পনেরো দিনের জন্য সমস্ত পুলিশ কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এমনকি যারা ইতিমধ্যে ছুটি নিয়েছেন তাঁদেরও শুক্রবার নিজস্ব থানায় যোগ দিতে বলা হয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এর জঙ্গলমহল অধ্যুষিত থানাগুলিকে কড়া সর্তকতা নিতে বলা হয়েছে।কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের এই আশঙ্কার জেরেই এই হাই অ্যালার্ট। শনিবার থেকে এই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানান, যে কোনও নাশকতা রুখতে জেলা পুলিশ সতর্ক।

উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল মাওবাদীদের ডাকা বনধে বেশ ভালই সাড়া পড়েছিল। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম্, বাঁকুড়ার বেশ কিছু এলাকা প্রায় স্তব্ধ হয়েছিল। এরপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে যৌথ বাহিনী। এই তিন জেলায় জঙ্গলমহল এলাকাতেও শুরু হয়েছে জোরদার তল্লাশি।এই ধরনের মাও নাশকতার আশংকা নিয়ে জেলা পুলিশ কিছু বলতে চায়নি।মাওবাদীদের ডাকা বনধের আগের দিনই তাজা ল্যান্ডমাইন উদ্ধার হয়েছিল ঝাড়গ্রামের লবনীতে। বড় ধরনের নাশকতার উদ্দেশ্যে ওই ল্যান্ডমাইনটি পোতা হয়েছিল বলে জানিয়েছিল জেলা পুলিশ ও সিআরপিএফ কর্তৃপক্ষ। প্রায় সাত কিলো বিস্ফোরক ছিলো ক্যানের ভেতরে। যা একটা গাড়ি ওড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উদ্ধার হওয়া ক্যান দেখে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দু সপ্তাহের পূর্বেই পোঁতা হয়েছিল ওই মাইন।

যেহেতু সিআরপিএফের ১৮৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নের ক্যাম্পটি সামনেই। তাই নাশকতার জন্যই এখানে ল্যান্ডমাইনটি পোতা হয়েছিল বলে স্থানীয় পুলিশের অনুমান। জানা গেছে তৃণমূল আমলে এত শক্তিশালী এবং তাজা ল্যান্ড মাইন উদ্ধার হয়নি এর আগে। মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অরুণকুমার ভট্টাচার্য ওরফে কাঞ্চন ও পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক ব্যুরোকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার সহ পাঁচ রাজ্যে গত ৫ এপ্রিল বনধের ডাক দিয়েছিল মাওবাদীরা। বেলপাহাড়ি এলাকায় সেই বনধের ভাল প্রভাব পড়ে যায়। পরবর্তীতে ৮ এপ্রিল ‘লুম্পেনদের চাকরি দেওয়ার প্রতিবাদে’ বাংলা বনধ ডাকে মাওবাদীরা। সেই বনধেও জনজীবন ব্যহত হয় জঙ্গলমহলের বেশিরভাগ এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *