হাফলং (অসম), ৬ এপ্রিল (হি.স.) : ভারতীয় রেলে এবার টিকিট সংরক্ষণ করে বসার আসনের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রেলযাত্রীদের। রেলযাত্রীরা ট্রেনের টিকিট সংরক্ষণ করেও বসার জন্য আসন পাচ্ছেন না, অভিযোগ রেলযাত্রীদের।
কোভিড অতিমারির সময় ভারতীয় রেল যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিতে সাধারণ শ্রেণির কামরাগুলি তুলে দিয়েছিল। তার পর থেকে সাধারণ শ্রেণির কামরা ছাড়াই এখনও চলছে যাত্রীবাহী ট্রেন। এমন-কি কোভিড অতিমারির সময় সাধারণ শ্রেণির টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছিল ভারতীয় রেল। কিন্তু বর্তমানে সমগ্র দেশে কোভিড পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর, আবার রেল স্টেশনগুলিতে সাধারণ শ্রেণির টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিতে সংরক্ষিত কামরা ছাড়া সাধারণ শ্রেণির রেল যাত্রীদের জন্য নেই কোনও সাধারণ শ্রেণির কামরা। এতে ট্রেনে বাড়েছে ভিড়।
তাই এবার অনেক রেলযাত্রী সাধারণ শ্রেণির টিকিট নিয়ে চড়ে বসেন ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায়। যার দরুন যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিতে আসন সংরক্ষণ করেও অনেক রেলযাত্রী নিজের সংরক্ষিত আসনে বসতে পারেন না। ফলে রেলে যাত্রী দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। কিন্তু এ সব ক্ষেত্রে ট্রেনে কর্তব্যরত টিটিই-দের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে করে শুরু করেছেন রেলযাত্রীরা। কেননা, সাধারণ শ্রেণির টিকিট প্রত্যেক স্টেশনের কাউন্টারে বিক্রি শুরু হওয়ার দরুন এখন যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিতে ভিড় প্রচণ্ড বেড়েছে।
মাইবাঙের জয়ন্ত দত্ত নামের এক রেলযাত্রী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তিনি শিলচর-কয়াম্বটুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শিলচর-থেকে মাইবাং পর্যন্ত ডি-২ কামরায় আসন সংরক্ষণ করেছিলেন। ট্রেনটি শিলচর থেকে ছাড়ার সময় ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু বদরপুর আসার পর ট্রেনের কামরায় সাধারণ শ্রেণির টিকিট নিয়ে অনেক যাত্রী ডি-১ ডি-২ কামরাগুলিতে ভিড় করেন। চারজনের আসনের জায়গায় ছয়জন করে যাত্রী বসেন। এমন-কি এই কামরাগুলিতে এতই ভিড় ছিল যে আসন সংরক্ষণ করেও অনেকে বসার জায়গা পর্যন্ত পাননি।
সাধারণ শ্রেণির টিকিট নিয়ে অনেক রেলযাত্রী জোর করে অন্যের সংরক্ষিত আসনে বসে পড়েন। কিন্তু সে সময় ট্রেনে কর্তব্যরত টিটিইদের খুঁজে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন জয়ন্ত দত্ত নামের ওই রেলযাত্রী। এমন-কি বদরপুর স্টেশন ম্যানেজারকে রেলযাত্রীরা অভিযোগ জানানোর পরও তিনি কোনও পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ করেন ওই রেলযাত্রী। অভিযোগ, ট্রেনের এই সব কামরা যখন ভিড়ে ঠাসা, ঠিক সে-সময় ট্রেনের কর্তব্যরত টিটিইবাবুরা বাতানুকুল কামরায় দিব্যি বসে থাকেন বলেও অভিযোগ করেন রেলযাত্রীরা। এভাবে প্রতিদিনই ট্রেনগুলিতে আসন সংরক্ষণ করে রেলযাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড় এবং সাধারণ টিকিট নিয়ে চলাচলকারী রেলযাত্রীদের জন্য দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে।
কিন্তু ভারতীয় রেল কৰ্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই ভারতীয় রেলের এমন ভূতপড়ে কাণ্ডে এবার যাঁরা গাঁটের পয়সা খরচ করে আগে থেকে ট্রেনের টিকিট সংরক্ষণ করেন ট্রেনে চড়ে বসার জন্য, তাঁরা নিজের সংরক্ষিত আসন না পাওয়ায় রেল বিভাগের উপর এ সব যাত্রীদের ক্ষোভ বাড়ছে।