টাকি, ১৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একের পর এক পুরসভার দখল নিচ্ছে তৃণমূল৷ বীরভূমের পর এবার উত্তর ২৪ পরগনার টাকি পুরসভাতে ভোটের আগেই জয় হাসিল করে নিল শাসক দল৷ সাতটি ওয়ার্ডের বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল৷ রবি সকালেই সামনে এসেছে টাকি পুরসভার ঘটনাটি।
ইচ্ছামতীর তীরে বাংলাদেশের কান ঘেঁষে থাকা উত্তর ২৪ পরগনার টাকি পুরসভায় ওয়ার্ড সংখ্যা ১৬। সেখানেই ৭টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস প্রার্থীরা। আরও ২টি ওয়ার্ডে এই ৩ দলের প্রার্থীরা লিফলেট বিলি করে ভোটের ময়দান থেকে সরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। যার জেরে ৯টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেল তৃণমূল। সেই হিসাবে ভোটের আগেই এই শহরের পুরবোর্ড চলে এলে তৃণমূলের দখলে। আবার গতকাল বিকালেই জানা গিয়েছিল, বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভাও তৃণমূলের দখলে আসতে চলেছে। ইতিমধ্যেই সেখানে ৫টি ওয়ার্ডের বাম, কংগ্রেস ও বিজেপির প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আরই ৬টি ওয়ার্ডের ওই ৩ দলের প্রার্থীরা লিফলেট বিলি করে ভোটের ময়দান থেকে সরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
বিরোধী দলগুলি এই ঘটনার পিছনে শাসক দলের সন্ত্রাসকে কারণ হিসাবে তুলে ধরলেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থীদের বয়ান অন্য কথা বলছে । অন্তত টাকির ক্ষেত্রে। সেখানে মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা জানিয়েছেন টাকিতে তৃণমূল ছাড়া আর অন্য কোনও দলের সংগঠন নেই। তাই তাঁরা পরাজয় অবশ্যম্ভাবী বুঝেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। টাকি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী সুজয় ঘোষের বক্তব্য, ‘সাংগঠনিকভাবে সিপিএম এখানে দুর্বল। সমর্থকরা বেরতে চাইছেন না। দিদির নেতৃত্বে টাকি পুরসভা আরও উন্নয়ন করুক। তাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলাম।’
আবার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আমাদের এখানে সংগঠন খুবই দুর্বল। নেতৃত্ব দেওয়ার কেউ নেই।’
আর এসবের মাঝেই টাকি পুরসভার কো-অর্ডিনেটর শাহানুর মণ্ডল বলেন, ‘বিরোধীরা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে গিয়েছে৷ তার উপর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় এনেছে তাতে বিরোধীরা মনের দিক থেকেও দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ যারা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তাদেরকে এক সঙ্গে নিয়ে মানুষের কাজ করব৷ এই পুরসভাকে আরও বেশি উন্নত পুরসভা গড়ে তোলার চেষ্টা করব৷’
টাকি তৃণমূল কংগ্রেসের টাউন সভাপতি প্রদ্যুৎ দাস বলেন, ‘পুরসভার জয় এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা৷ টাকি এবার বিরোধীশূন্য হবে৷ যেভাবে এখানে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে বিরোধীরা কোনও রাজনৈতিক ইস্যু খুঁজে পাচ্ছে না৷ মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করেছে৷ যাঁরা দলে এসেছেন তাঁদের সঙ্গে নিয়ে টাকির উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব৷’

