নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ ডিসেম্বর৷৷ সততা ও নিষ্ঠার সাথে লেখাপড়া শেষ করে ছাত্র সমাজকে সমাজের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তপশিলীজাতি কল্যাণ মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস৷ আজ মাতঙ্গিনী প্রীতিলতা হলে তপশিলী জাতি অংশের ছাত্রছাত্রীদের এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি বলেন, শিক্ষিত হওয়া এবং নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়াই শেষ কথা নয়৷ আমরা সমাজের কাছে চিরঋণী ও দায়বদ্ধ৷
আমাদের দায়িত্ব সমাজকে কিছু দেওয়া৷ যাদের সান্নিধ্যে বড় হয়েছি তাদের ভুলে গেলে এর থেকে বড় স্বার্থপরতা আর কিছু হতে পারে না৷ তাই ছাত্র সমাজকে সমাজের অসহায়, দুস্থ বঞ্চিতদের কল্যাণে কাজ করতে হবে৷ তবেই লব্ধ শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছাবে৷
তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷ অনুষ্ঠানে রাজ্য ও বহিরাজ্যের বিএড, বিএসসি নার্সিং, বি টেক, জি এন এম প্রভৃতি কোর্সে পাঠরত মোট ২৪৭ জন ছাত্রছাত্রীকে প্রথম কিস্তিতে এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা মঞ্জুরী দেওয়া হয়৷
এতে দপ্তরের মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা৷ পরবর্তী সময় আরও ৫০ হাজার টাকা করে দ্বিতীয় কিস্তি দেওয়া হবে৷ এবছর আরও ২৭০ জনকে এ প্রকল্পে সহায়তা করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ প্রদীপ জ্বেলে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে তপশিলী জাতি কল্যাণ মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস বলেন, ছাত্রছাত্রীরা সমাজ, রাজা ও দেশের ভবিষ্যত৷ তারা সুনাগরিক হলেই দেশ লাভবান হবে৷ প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী যাতে একটা স্বীকৃতি লাভ করতে পারে সে লক্ষ্য নিয়েই সরকার কাজ করছে৷ তিনি বলেন, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করার পরও অনেক ছাত্রছাত্রী অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেনা৷
তাদের উদ্দেশ্যেই রাজ্য সরকার ওয়ান টাইম ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট প্রকল্প চালু করেছেন৷ তার বাইরেও প্রি মেট্রিক, পোষ্ট মেট্রিক স্কলারশিপ ও উচ্চশিক্ষার জন্য লোনের সংস্থান রয়েছে৷ তিনি বলেন, এসসি, এসটি এবং ওবিসি এই তিন সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা বড় অংশ রয়েছেন যাদের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার অনুন্নত বলে চিহ্ণিত করেছেন৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এই তিন সম্প্রদায়ের উন্নয়নে আন্তরিক রয়েছেন৷ সবদিক বিচার বিশ্লেষণ করে রাজ্য সরকার এই তিন সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের৷ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন৷ তিনি বলেন, কল্পগুলি তাদের ভবিষ্যত গঠনে সহায়ক ভূমিকা নেবে৷ আগামী দিনে আরও কি পরিকল্পনা নেওয়া যায় তার প্রচেষ্টা চলছে৷
এই প্রয়াসগুলি সমাজকে নতুন দিশা দেখাবে৷ সমাজকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ তিনি বলেন, এসসি, এসটিদের জন্য অনেক ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস রয়েছে৷ কিন্তু বিগত সরকার এই আবাসগুলির পানীয় জল, শৌচালয়, আসবাবপত্র, পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়ে উদাসীন ছিল৷
পূর্বতন সরকার এসসি, এসটি এবং ওবিসি’’র উন্নয়নে সচেষ্ট ছিল না৷ বর্তমান সরকার প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর স্টাইপেন্ডের জন্য অনলাইন ব্যবস্থা চালু করেছে৷ ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসগুলির সার্বিক উন্নয়নে তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷
তিনি বলেন, সংকীর্ণ মানসিকতার উদর্ে উঠে এই সরকার কাজ করছে৷সভাপতির ভাষণে তপশিলীজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী বলেন, দুর্বল শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া করতে অর্থের অভাব যাতে না হয় সেলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী ‘ওয়ান টাইম ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট প্রকল্প চালু করেছেন৷ এ প্রকল্পের সুযোগ সততা ও নিষ্ঠার সাথে ছাত্রছাত্রীদের গ্রহণ করতে হবে৷ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী শ্রীদাস পিবিএসসি নার্সিং ছাত্রী রিংকু কর সহ ১০ জন ছাত্রছাত্রীর হাতে ৫০ হাজার টাকা করে মঞ্জুরীপত্র তুলে দেন৷
এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় হয়৷ অনুষ্ঠানে বহু ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন৷ সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তপশিলীজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস৷