স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের ঠকানোর দায়ে দুই প্রতারক পুলিশের জালে

বিশালগড়, ১৪ ডিসেম্বর : স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে প্রতারণা করে টাকা আনতে গিয়ে হাতেনাতে আটক হল প্রতারক শ্যালক ও ভগ্নিপতি। দুজনকে আটক করে প্রতারণার মামলা গ্রহণ করে আদালতে সোপর্দ করেছে বিশালগড় থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সিপাহীজলা জেলা শিক্ষা আধিকারিক হাবুল লোধের স্বাক্ষর নকল করে এবং ত্রিপুরা স্টেট সোসাইটি ফর সাইন্স এন্ড টেকনোলজির প্যাড নকল করে চেচুড়ীমাই হাইস্কুলে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা তুলতে গিয়ে  হাতেনাতে আটক হল দুই প্রতারক। তারা সম্পর্কে  শ্যালক এবং ভগ্নিপতি। তাদের বাড়ি সিপাহী জলা জেলার নলছড় বিধানসভার বগাবাসা এলাকায়। তাদের নাম হল জীবন রায় ও শান্ত দাস।
এই দুই যুবক স্মার্ট ইন্ডিয়া ওয়ালেট নামে একটি এনজিওর কর্মকর্তা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। ওই এনজিও-র নামে বিভিন্ন স্কুল থেকে টাকা তুলেছে। চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকেও তারা টাকা তুলেছে। গতবছরও সিপাহীজলা জেলার একটি স্কুল থেকে টাকা তুলেছে এই দুই প্রতারক।
পুলিশের দাবি, বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকদের জেলা শিক্ষা আধিকারিকের স্বাক্ষর করা অনুমতি পত্র দেখিয়ে তারা স্কুলে প্রবেশ করেন। বাস্তবে সেই অনুমতি পত্র সম্পূর্ণ ভুয়ো। জেলা শিক্ষা আধিকারিক এধরনের অনুমতিপত্র দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না বলেও স্পষ্টভাবেই দাবি করেছেন।  
অভিযোগে জানা গেছে, দুই প্রতারক চেচুড়ীমাই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলেছে জেনারেল নলেজ এর উপর ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নেবে। পরীক্ষায় যারা ৮০ শতাংশের উপরে নম্বর পাবে তাদেরকে পুরস্কার দেওয়া হবে।  ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ক্যাটাগরি অনুযায়ী ফি নেওয়া হবে। তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হীরালাল দেববর্মার সন্দেহ হয়। তিনি বিষয়টি জেলা শিক্ষা আধিকারিকের নজরে নেন।
জেলা শিক্ষা আধিকারিক বলেন, তিনি এমন কোনো নির্দেশ দেননি। সঙ্গে সঙ্গে  জেলা শিক্ষা আধিকারিক এবং অন্যান্য অফিসাররা তাদেরকে আটক করে বিশ্রামগঞ্জ থানায় খবর দেন। জেলা শিক্ষা  আধিকারিক নিজে এই দুই যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। দুই প্রতারককে মেডিকেল করিয়ে রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বিশালগড় মহকুমা আদালতে সোপর্দ করে বলে জানিয়েছেন বিশ্রামগঞ্জ থানা ওসি পান্নালাল সেন।
এদিকে জেলা শিক্ষা আধিকারিক বলেন, তারা প্রথম অবস্থায় ধরা পড়ে যাওয়াতে অল্পেতে রক্ষা পেয়েছে জেলার অন্যান্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তবে বিষয়টি হীরালাল দেববর্মার নজরে না আসলে এই প্রতারক চক্র অনেক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যেত।
এর পেছনে বড় ধরনের চক্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় পুলিশ তদন্ত করে প্রতারক চক্রের মূল পাণ্ডাদের আটক করতে পারে কিনা। সিপাহী জলা জেলার এই ঘটনা দেখে অন্যান্য জেলা গুলি সতর্ক হয়ে গিয়েছে। প্রতারণা আজ সর্বস্তরে পৌঁছে গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *