BRAKING NEWS

আগামীদিনে ত্রিপুরা উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র দেশেই নয় সমগ্র বিশ্বের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠবে : কেন্দ্রীয় গ্রামীণ বিকাশ মন্ত্রী

আগরতলা, ৩ ডিসেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরা বনাধিকার অ্যাপ চালুর মাধ্যমে ত্রিপুরা আজ সমগ্র দেশবাসী বিশেষ করে দেশের জনজাতিদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আগামীদিনে ত্রিপুরা উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র দেশেই নয় সমগ্র বিশ্বের কাছে উদাহরণ হয়ে উঠবে। আজ কেন্দ্রীয় গ্রামীণ বিকাশ এবং পঞ্চায়েতীরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ত্রিপুরায় রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলপত্র রেজিস্ট্রেশনের জন্য ন্যাশনাল জেনেরিক ডকুমেন্ট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এনজিডিআরএস) ও ত্রিপুরা বনাধিকার অ্যাপের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে এই কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কথায়, জনজাতির বঞ্চিত হচ্ছিলেন। বনাধিকার আইনে পাট্টা প্রাপকদের প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য বর্তমানে পশ্চিম জেলার জেলা সাব রেজিস্ট্রি সদর, জিরানীয়া ও মোহনপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিস এবং সিপাহীজলা জেলার বিশালগড়, সোনামুড়া ও জম্পুইজলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে এই ন্যাশনাল জেনেরিক ডকুমেন্ট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম সফটওয়ার চালু হচ্ছে। পরে পর্যায়ক্রমে রাজ্যের অন্যান্য সাব রেজিস্ট্রি অফিসেও এই সফটওয়ার চালু হবে।

এদিন কেন্দ্রীয় গ্রামীণ বিকাশ এবং পঞ্চায়েতীরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেন, ত্রিপুরা আজ উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ত্রিপুরায় জমির দলিলপত্র রেজিস্ট্রেশনের জন্য ন্যাশনাল জেনেরিক ডকুমেন্ট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এনজিডিআরএস) এবং ত্রিপুরা বনাধিকার অ্যাপ চালু করার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের নেতৃত্বাধীন সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, এই উদ্যোগ ত্রিপুরার সমস্ত অংশের নাগরিকদের জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে যেমন সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে, পাশাপাশি বনাধিকার আইনে জমির পাট্টাপ্রাপক জনজাতিদের জমির অধিকারও সুনিশ্চিত করবে। এরফলে আগামীদিনে পাট্টাপ্রাপক জনজাতিরা ত্রিপুরার জিডিপি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। এই ক্ষেত্রে তিনি পাট্টাপ্রাপক জনজাতিদের জীবনমান উন্নয়নে ঐ সমস্ত বনভূমি এলাকার পাট্টা প্রাপ্ত জমিতে উদ্যানপালনের উপর জোর দেওয়ার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কেন্দ্রীয় গ্রামীণ বিকাশ এবং পঞ্চায়েতীরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং আরও বলেন, দেশের ৬.০৮ লক্ষ গ্রামে জমির ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। ভারতে প্রায় ৯৫ শতাংশ জমি ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় আনা হয়েছে।

রাজ্য সচিবালয়ে ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ত্রিপুরার জন্য আজ এক গর্বের দিন। কারণ, এরাজ্যে প্রায় ৩২ শতাংশ জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে বনাধিকার আইনে জমির পাট্টা প্রাপকগণ জমি চিহ্নিতকরণ সহ জমি সংক্রান্ত নানা সমস্যার কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধির সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এই ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় এবং প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগের ফলে আজ রাজ্যের বনাধিকার আইনে পাট্টা প্রাপকদের প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তাঁর দাবি, এই পদক্ষেপ জনজাতিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা প্রতিফলিত হয়েছে। বনাধিকার আইনে জমির পাট্টা প্রাপকদের জমির অধিকার সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি জোর গলায় বলেন, ত্রিপুরাই দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য যেখানে এই ধরণের অ্যাপের সূচনা হয়েছে। জিপিএস নির্ভর এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে খুব কম সময়ে জমির সমীক্ষা ও সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

এদিন রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরায় ন্যাশনাল জেনেরিক ডকুমেন্ট রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম চালুর মাধ্যমে ল্যান্ড রেকর্ড এবং জমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা এগিয়ে চলেছে। তাঁর মতে, নাগরিক কেন্দ্রিক এই সিস্টেম শহর এবং প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারীদের বিশেষ সুবিধা প্রদান করবে। আজ অনুষ্ঠানে বিকাশ চন্দ্র পাল এবং সন্দীপ দেববর্মার হাতে ডিজিটাইজড জমির দলিলপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *