নেতৃত্বের সমালোচনায় বক্তব্যে অটল তথাগত রায়, বিতর্ক সামাজিক মাধ্যমে

কলকাতা, ৩ নভেম্বর (হি. স.) : মঙ্গলবার থেকে লাগাতার নেতৃত্বের সমালোচনা করে যাচ্ছেন রাজ্য বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়। এ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর বুধবারের মন্তব্য নিয়েও বিতর্কও হচ্ছে। তবু বক্তব্যে অটল তথাগতবাবু।

বুধবার টুইটে তিনি লিখেছেন, “আমি প্রকাশ্যে বিজেপি নেতাদের নিন্দা করেছি বলে কেউ কেউ মর্মাহত হয়েছেন। শুনে নিন। নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে একটি কথাও বলি নি। দলের ভিতরে বলেছি। কিন্তু নির্বাচনে ভরাডুবি হবার পরে যখন দেখা গেল কোনো বিশ্লেষণের চেষ্টা নেই, উল্টে “৩ থেকে ৭৭” বলে নিজেদের পিঠ চাপড়ানো হচ্ছে, তখন বলতেই হল।“এরপর তিনি ফেসবুকেও এটি আপলোড করেন।
প্রতিক্রিয়ায় সৌম্য সাঁতরা লিখেছেন, “বিজেপি জীবনে আসবে না। বামফ্রন্টের ভোট ৯ হাজার থেকে ৩৯,০০০ হয়ে গেল।” পার্থজিৎ দত্ত লিখেছেন, “৩৪ বছরও আর ফিরবে না৷“

সম্রাট চক্রবর্তী লিখেছেন, “আমি একটা কথাই বারবার বলে যাচ্ছি তথাগত বাবু। আপনি একজন প্রবীণ তথা অভিজ্ঞ বিজেপি নেতা। পিঠ চাপড়ানো নিয়ে যে বক্তব্য রাখলেন সেটা ১০০% সত্যি হলেও গত কয়েকমাসে আপনার এই বাক্যবান যাদের উদ্দেশ্যে তাঁরা কিন্তু উত্তরোত্তর নিজেদের পদোন্নতি করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে মুখোমুখি বসিয়ে সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য তুলে না ধরতে পারলে এই বাক্যবাণ সম্পূর্ণ অপব্যয়।

দক্ষিণপন্থী চিন্তা তথা হিন্দুত্ব নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে তথা পার্টির মধ্য থেকে আপনাকে মাঠে নেমে কাজ করার অনুরোধ জানাই যেমনটা শুভেন্দু বাবু করছেন। মাত্র এক বছর আগে এসেও শুভেন্দু বাবু যেভাবে পার্টির জন্য পরিশ্রম করে চলেছেন এবং নিয়মিত অন্তরালে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক করছেন তেমনটাও আপনাকে করার আবেদন জানাই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এতটা অবিবেচক বলে মনে করি না। কিন্তু নিশ্চয়ই কোনো খামতি রয়েছে,যার জন্য গ্রাম বাংলার মাটির খবর তাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।”

প্রকাশ ঘোষ লিখেছেন, “জয় শ্রী রাম, ভাই, একদম মনের কথা বললে। কেউ শেষ অবধি বললো! ধন্যবাদ। বাংলাকে যদি বাচাতে চান তিনোমুলি চোর-ডাকাতদের-তোলাবাজদের থেকে, নিজের ভবিষ্যৎ, চাকরির জন্য ভাবলে আপনি আমার সাথে একমত হবেন। আমি একজন বিজেপির সমর্থক হয়েও বলছি। বাংলায় বিজেপিকে দিয়ে হবে না। এরা পারবেনা তৃণমূলকে হারাতে। সেই ইচ্ছেই নেই এদের। সব পদলোভী। বাংলায় বিজেপি শেষ। মে মাসের বিধানসভার ভোটে যে বিজেপি ৪০% ভোট পেয়েছিল, এই চারটের মধ্যে ২ আসন জিতেছিল, তাঁদের আজ সেই তিনটে আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ।

বাংলার মানুষ বিজেপিকে হারাতে অনিচ্ছাসত্ত্বেও তৃণমূলকে ভোট দিচ্ছে, শুধুমাত্র যাতে বিজেপি জিততে না পারে সেই জন্য। বাংলায় বিজেপি থাকলে তাই তৃণমূলের লাভ। ২০২১ এর ভোট মানুষ তৃণমূলকে চায়নি! তবু তৃণমূল জিতেছে শুধু এই কারণে। তাই বিজেপিকে এখন ভোট দেওয়া মানে সামনে আরো ২০ বছর তৃণমূলের ক্ষমতায় থাকার পাকা বন্দোবস্ত করে দেওয়া। তৃণমূলকে সত্যি যদি হারাতে চান তাহলে বিজেপিকে অন্তত ভোট দিয়ে নষ্ট করবেন না আপনার ভোট। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দল সিপিএমকে দিন আপনার মূল্যবান ভোট। বিজেপি বাংলায় থাকলে তৃণমূল আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু বিজেপির জুজু দেখিয়ে পরপর ভোট জিতে যাবে। বেকারদের চাকরি, এসএসসি সব বন্ধই থাকবে। তাই তৃণমূলকে হারাতে চাইলে বিরোধীদল হিসেবে বিজেপিকে রাখা চলবেনা। বিজেপিকে একটাও ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলের সুবিধে করে দেওয়া আর বাংলার আপনার-আমার মতো বেকার যুবকদের ভবিষ্যত নষ্ট করা। এবার ভেবে দেখুন।“