BRAKING NEWS

Congress is on the verge of extinction : তৃণমূলের আবির্ভাবে রাজ্যে কংগ্রেস নিশ্চিহ্ণের পথে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ জুলাই৷৷ রাজ্যে তৃণমূলের আবির্ভাবে কংগ্রেস কার্যত নিশ্চিহ্ণের পথে এগিয়ে চলেছে৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে বলে মনে হচ্ছে, প্রাক্তন বিধায়ক বিরজিত সিনহা দলবদল করার চিন্তাভাবনায় রয়েছেন৷ কারণ, ঢাকি সুদ্ধ বিসর্জন দিয়ে কংগ্রেস থেকে এক ঝাঁক নেতা আজ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷ অবশ্য সুবল ভৌমিকের নেতৃত্বে ওই কার্য সম্ভব হয়েছে৷ তৃণমূলের জন্য অবশ্য ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে৷


এদিন সন্ধ্যায় তিনি দাবি করেন, বিজেপিকে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আনতে ১০০ শতাংশ চেষ্টা করেছি৷ এখন ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় সরকার গঠন সম্ভব হবে, ১০০ শতাংশ নিশ্চিত আমি৷ তবে, সুবল ভৌমিকের রাজনৈতিক জীবনী অতিরঞ্জিত, অন্তত ত্রিপুরাবাসী তা ভালই জানেন৷ এদিকে, আগামী দুই অগাস্ট তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ত্রিপুরায় আসছেন৷ ওইদিন ত্রিপুরায় বড়সড় চমক অপেক্ষা করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ কারণ, এনএসইউআই-র একটা বড় অংশ তৃণমূলে যোগদানের জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে৷


এক সময়ে সুবল ভৌমিক কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন৷ ২০১৩ বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে প্রগতিশীল গ্রামীণ কংগ্রেস নামে নতুন দল গঠন করেন৷ এরপর তিনি ওই দল বিলোপ করে তৃণমূলে মিশে যান৷ তৃণমূলেও বেশি দিন ঘর করেননি তিনি৷ সেখান থেকে সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেন৷ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে সহ-সভাপতি দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ কিন্ত, ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে পছন্দসই আসনে প্রার্থী হতে না পেরে গোসা করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না স্থির করেন৷ পরে অবশ্য, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার হস্তক্ষেপে তিনি সোনামুড়া আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন৷ কিন্ত জয়ী হতে পারেননি৷ তাই, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক মুহুর্তে বিজেপি ছেড়ে তিনি পুণরায় কংগ্রেসে ফিরে যান৷ পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনে তিনি প্রার্থী হন৷ কিন্ত, ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস৷ লোকসভা নির্বাচনেও তিনি পরাজিত হন৷
তারপর থেকে অনেকটা সময় পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি৷ মনে হয়েছিল, রাজনীতি থেকে সন্যাস নিয়েছেন৷ কিন্ত, গতকাল তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের সাথে গোপন বৈঠক সেরে আজ সোজা দলেই যোগ দিলেন তিনি৷ সাথে কংগ্রেস থেকে একঝাঁক নেতা-নেত্রীকেও নিয়ে গিয়েছেন৷ প্রাক্তন কাউন্সিলর পান্না দে, প্রাক্তন মন্ত্রী প্রকাশ দাস, কংগ্রেস নেতা ইদ্রিস মিঞা সহ আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সুবল বাবু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন৷ সূত্রের খবর, এনএসইউআই প্রদেশ সভাপতি রাকেশ দাসও তৃনমুলে যোগ দেবেন৷
এদিন সুবল বাবু দাবি করেন, বিজেপিকে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এনে ভুল করেছি৷ সেই ভুল সংশোধনে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছি৷ তিনি জোর গলায় বলেন, মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে ২০২৩ সালে ত্রিপুরায় তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে৷ এদিকে, আজ সবচেয়ে বড় চমক দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পিযুষ কান্তি বিশ্বাস৷ তিনি আই-প্যাকের সদস্যদের পক্ষে আদালতে মামলা পরিচালনা করেছেন৷ শুধু তাই নয়, তাঁর মক্কেলদের কোন ক্ষতি হতে দেবেন না বলে তিনি জোর গলায় দাবি করেছেন৷


রাজ্যে কংগ্রেস কার্যত বাবা ও ছেলের সম্পত্তি হয়ে দাড়িয়েছে৷ ফলে, অনেকেই কংগ্রেস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন৷ তাছাড়া কংগ্রেস হাই কমান্ড ত্রিপুরা কোন সময়েই আগ্রহী ছিলেন না৷ আজও তার ব্যতিক্রমী কিছু ঘটেনি৷ ফলে, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর এডিসি নির্বাচনে ঝুলি শূন্য রয়ে গেছে কংগ্রেসের৷ ২০২৩-র বিধানসভা নির্বাচনেও একই পরিনতি হবে তা এখনই আন্দাজ করা যাচ্ছে৷
এদিকে, ডারেক-ও-ব্রায়েন আগামীকাল দিল্লি ফিরে যাবেন৷ কিন্ত, ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় ও কাকলি ঘোষ দস্তিদার ত্রিপুরায় রয়ে যাবেন৷ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ত্রিপুরায় আসা পর্যন্ত তাঁরা রাজ্যেই ঘাটি গেড়ে বসেছেন৷


তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের রাজ্য সফরকে ঘিরে এলাহী নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফরমাইস এসেছে ত্রিপুরা সরকারের কাছে৷ তিনি জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন৷ সেই অনুসারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ ত্রিপুরা সরকারের কাছে চিঠি এসেছে৷ আগামী ২ অগাস্ট দুপুর ১২টা নাগাদ রাজ্যে এসে প্রথমেই তিনি সড়ক পথে উদয়পুরে মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির দর্শনে যাবেন৷ সেখান থেকে আগরতলায় ফিরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করবেন৷ ওইদিনই বিকেলের বিমানে তিনি কলকাতা ফিরে যাবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *