আগরতলা, ৫ জুলাই : লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ত্রিপুরায় সেঞ্চুরি হাঁকাল। সাথে ডিজেলের দাম শতকের খুব কাছাকাছি লিটার প্রতি ৯৩-তে পৌছে গিয়েছে। তাতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ লক্ষ্য করা গিয়েছে। জনৈক গ্রাহকের বক্তব্য, ভয়ানক পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা, যা এখন সহ্যের বাইরে চলে গেছে। প্রতি নিয়ত মূল্যবৃদ্ধির পদ্ধতিতে বদল আনা দরকার। এদিকে, আগরতলা শহরের বুকে পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এসইউসিআই বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এই প্রথম পেট্রোল সেঞ্চুরি পার করেছে।
এ-বিষয়ে এসইউসিআই অফিস সম্পাদক সঞ্জয় চৌধুরী বলেন, করোনা অতিমারী পরিস্থিতিতে দেশের বেশীরভাগ মানুষ রোজগারহীন অবস্থায় বিবিধ সমস্যার সম্মুখীন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সহ পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস-এর দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। এই দূর্বিসহ পরিস্থিতিতে দাম কমিয়ে জনসাধারণকে রক্ষা করার পরিবর্তে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি নিশ্চুপ হয়ে নিরবে তেল কোম্পানীগুলিকে অধিক মুনাফা অর্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে এবং কর বাবদ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তহবিল স্ফিত করছে। তাঁর কটাক্ষ, সরকার পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম বৃদ্ধির ধুয়া তুলছে। অথচ, এ-কথা কারোর অজানা নয় যে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম যখন তলানীতে ছিল তখনও সরকার পেট্রোপণ্যের দাম কামানোর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। কারণ যত দাম বাড়বে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ট্যাক্স বাবদ আয়ও তত বাড়বে। তাই পেট্রোপণ্যকে জিএসটি-এর আওতার বাইরে রেখে অধিক হারে ট্যাক্স আদায় করে সরকার বছরে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা আয় করছে।
তিনি বলেন, পেট্রোপণ্যের দাম বাড়লে পরিবহণের ভাড়াও বাড়ে এবং এই ভাড়া বৃদ্ধির সাথে মূল্যবৃদ্ধিরও সম্পর্ক আছে। এমতাবস্থায় এস ইউ সি আই (সি) দল দেশব্যাপী এই মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলছে। তারই অঙ্গ হিসাবে আজ দুর্গাবাড়ী পেট্রোল পাম্পের নিকটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়ে উল্লেখিত দাবি সম্বলিত পোষ্টার হাতে নিয়ে এক বিক্ষোভ ধর্ণা সংগঠিত হয়েছে। তাতে, আবিলম্বে পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম কমানোর লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ট্যাক্স কমাতে হবে। পেট্রাপণ্যের উপর কর কমিয়ে এবং কর্পোরেট ট্যাক্স বৃদ্ধি করে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, জনগণের মাথায় বোঝা চাপিয়ে তেল কোম্পানীগুলিয় লাভ বৃদ্ধি করা বন্ধ করতে হবে।
.
এদিন পেট্রোলের মূল্য ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় যান চালকদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। জনৈক গ্রাহক বলেন, আমার জীবদ্দশায় এই প্রথম পেট্রোলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে পেয়েছি। তাঁর কথায়, মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আগামীদিনে যান চালাবেন কিভাবে সেই চিন্তায় রয়েছেন। অপর এক গ্রাহক বলেন, পরিস্থিতি সহ্যের বাইরে চলে গেছে। প্রতিনিয়ত মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে তেল কোম্পানিগুলিকে অধিক মুনাফা কামাতে দিচ্ছে সরকার। ওই পদ্ধতিতে বদল হওয়া খুবই জরুরি। খেয়াল-খুসি মতো চলছে, তা হওয়া উচিত নয়। প্রবীন এক গ্রাহক বলেন, পেট্রোলের দাম বেড়েই চলেছে। তাতে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিশ্চিত। ফলে, আখেরে সাধারণ মানুষের ঘাড়েই বোঝা চাপবে। তাঁর মতে, এক ভয়ানক অবস্থা তৈরী হয়েছে।

