গ্রামীণ ব্যাঙ্কে চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের ডেপুটেশন

আগরতলা, ৩ জুলাই : ব্যাংক ঋণের কিস্তির টাকা গ্যারান্টারদের কাছ থেকে কেটে না নেওয়ার দাবিতে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শনিবার চাকরিচ্যুত ১০৩২৩ শিক্ষকরা ডেপুটেশন প্রদান করেছেন।

জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ১০৩২৩ শিক্ষক শিক্ষিকরা শনিবার অভয়নগরে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে ডেপুটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। চাকুরীরত অবস্থায় ১০৩২৩ শিক্ষকদের অনেকেই বাতিঘর নির্মাণ কিংবা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার তাগিদে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ছিলেন। বর্তমানে তারা চাকরিচ্যুত। ১৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থাও নেই। আর্থিক অভাব-অনটনে অনাহারে-অর্ধাহারে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা করাতে পারছেন না আবার অনেকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার টাকার যোগান দিতে পারছেন না। জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ইতিমধ্যে তাদের মধ্যে ১০৪জনের মৃত্যু হয়েছে।

চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা যখন অসহায় হয়ে পড়েছেন তখনও গ্রামীণ ব্যাংকের তরফ থেকে তাদের ওপর ঋণের কিস্তির টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা বকেয়া কিস্তিতে মিটিয়ে দিতে পারছেন না তাদের গ্যারান্টারদের কাছ থেকে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংকের এ ধরনের কার্যকলাপ এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে জয়েন্ট মুভমেন্ট ফর ১০৩২৩ শিক্ষক সংগঠন। সংগঠনের এক প্রতিনিধি দল শনিবার গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে দেপোটেশন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। তারা গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দৃষ্টি গোচর করে বলেন তাদের এখন কিস্তির টাকা মিটিয়ে দেওয়ার মতো আর্থিক সংস্থান নেই। গ্যারান্টারদের কাছ থেকে কোনোভাবেই টাকা কেটে নেওয়া যাবে না।

তারা প্রশ্ন তুলেছেন যখন তারা ঋণ নিয়ে ছিলেন তখন তাদের ডিউরা সবকিছু বুঝে শুনেই ঋণ নেওয়ার জন্য সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন। সেই সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতেই গ্যারান্টাররা স্বাক্ষর করেছেন। কিস্তির টাকা যদি কেটে নিতে হয় তাহলে ডিডিওদের কাছ থেকে কেটে নেওয়ার দাবি জানান চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা। গ্যারান্টার দের কাছ থেকে কিস্তির টাকা কেটে নেওয়ার মধ্য দিয়ে চাকুরিচ্যুত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের এ ধরনের কার্যকলাপের ফলে কোন শিক্ষক আত্মহত্যা করলে এজন্য গ্রামীণ ব্যাংকের দায়ী থাকতে হবে বলেও তাড়াতাড়ি দিয়েছেন।


গ্রামীণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে গ্যারান্টারদের কাছ থেকে কিস্তির টাকা কেটে নেওয়া বন্ধ না করলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।