কলকাতা, ৮ জুন (হি. স.) : চলতি বছরে হচ্ছে না মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘জনমতকে গুরুত্ব দিয়েই মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক না করার সিদ্ধান্ত। কীভাবে হবে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, তা সাতদিনের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
কিন্তু রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে অনেকেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি। শিক্ষিকা মিতিল চক্রবর্তী লিখেছেন, ”মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীরা এমনিতেই ডিপ্রেশনের শিকার। পরীক্ষা বাতিল এই ঘোষণা তাদের আরো বিধ্বস্ত করবে। অবসাদের পরিণতি ভয়ঙ্কর যেন না হয় তারজন্য মনোবিদদের এই বিষয়ে আলোকপাত করা দরকার। বহু ছাত্র অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে আসে। অনেক কষ্টে একটা ছোট্ট ঘরে পড়াশোনাটা ঠিক চালিয়ে যায়। এদের মধ্যে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রও আছে। ছাত্রদের থেকে আমরা শিক্ষকরাও অনেক কিছু শিখি। আমার এক ছাত্র (যার মা বাড়ি বাড়ি কাজ করেন) আমায় বলেছিল ম্যাডাম সরকার সিলেবাস কমালেও আপনি পড়ান নইলে ওই চ্যাপ্টারগুলো আমাদের কোনদিন জানা হবে না।বিজ্ঞান নিয়ে ভবিষ্যতে পড়লে তো ইতিহাসের পাঠ দশম শ্রেণিতেই শেষ। আমি অনলাইনে পড়াচ্ছিলাম। আরেক ছাত্র বলল ওর বক্তব্য মেইল করছে। এও বলল সবার তো স্মার্ট ফোন নেই। পরীক্ষা বাতিল ঘোষণার পর বলল আমাদের মেইল যখন পড়াই হবে না তাহলে মেইল করতে বলা হল কেন? আমি নিরুত্তর। আসলে ওরা ভাবে শিক্ষকরা সর্বজ্ঞ। কিন্তু সব প্রশ্নের উত্তর আমাদের ও জানা নেই।
শিক্ষিকা সোমা ঘোষ লিখেছেন, ”কি যে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরী হলো….এর শেষ কোথায় জানি না।চৈতালি দাস লিখেছেন, ”খুব হতাশাজনক। সত্যি কী হবে ভবিষ্যৎ এই ছাত্র ছাত্রীদের!”
শিক্ষিকা মৌসুমী মুখার্জি লিখেছেন, ”আমার এক দশম শ্রেণির ছাত্র গতকাল আমায় মেসেজ করেই গেল রাত পর্যন্ত। ও মেইল করে পরীক্ষার সপক্ষে মতামত জানিয়েছিলl খুব হতাশাগ্রস্ত এবং বিষাদে ডুবেl ছেলেটি টানা উৎসাহ ভরে সারাটা বছর ধরে আমার অনলাইন ক্লাস করে গেছে। দেখেছি নির্দিষ্ট সময় একটু অতিক্রম করে গেলে ম্যাডাম ক্লাস নেবেন কিনা সেটা জানতে চেয়ে তার উদ্বেগ। আবার অনেক গরিব ঘরের ছেলে কোনোরকমে একটা স্মার্ট ফোন জোগাড় করে ক্লাস করে গেল মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবার জন্য। ওদের অবসাদ আবার কী ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে ভেবে শিহরিত হচ্ছি