আগরতলা, ২৮ মে (হি. স.) : বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের ফল চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন, এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সারা ভারত কৃষক সভার ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি। তাই কৃষক সভার ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর দাবি করেছেন, প্রয়োজনে ন্যুনতম সহায়ক মূল্যে ত্রিপুরা সরকার ফল ক্রয় করে চাষীদের সাহায্য করুক।
তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় প্রায় নয় হাজার ফল চাষি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন। রাজ্য প্রায় সব কটি জেলাতেই এই ফল চাষিরা বিভিন্ন ধরনের মরশুমী ফল চাষ করে থাকেন। এবারও ফল চাষিরা ব্যাপক পরিমানে আনারস, আম, কাঁঠাল, তরমুজ, লিচু, লেবু ও সুপারি উৎপাদন করেছেন। কিন্তু ফল চাষিরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের এই ফলের বাজার ধরতে পারছেন না। তাঁর দাবি, এই পরিস্থিতির জন্য মূল কারণ হচ্ছে করোনা কারফিউ। পবিত্র কর বলেন, জম্পুই থেকে সাব্রুম পর্যন্ত পরিস্থিতি একই রকম। তাঁর বক্তব্য, কোভিড পরিস্থিতিতে গত বছরও উত্তর পূর্ব ভারতের চাহিদা অনুযায়ী কিছুটা হলেও ফল পাঠানো গিয়েছিল। কিন্তু এবার আনারস ও কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও, এখনও চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় নি।
তাঁর মতে, ত্রিপুরায় শহর থেকে গ্রাম পাহাড়েও আনারস, কাঠাল, লিচু, লেবুর ব্যাপক চাহিদা আছে। করোনা কারফিউ-র জন্য ওই বাজার ধরা যাচ্ছে না। তাঁর সাফ কথা, লিচু, আনারস, কাঁঠালের বিশাল বাজার শুধু ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে, সাথে বাংলাদেশেও বিশাল চাহিদা আছে। তিনি বলেন, এবারের করোনা পরিস্থিতি ও কারফিউতে বহিঃরাজ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ত্রিপুরায় আসতেই পারছেন না। পাশাপাশি ফল ব্যবসায়ীরাও বাজারে যেতে পারছেন না। তাঁর দাবি, পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই সময়ের মধ্যে একাধিক চালান বাজারমুখি করে দিতেন।
তিনি বলেন, অসমের বরাক উপত্যকা থেকে শুরু করে মেঘালয়, মিজোরাম সহ সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারগুলি-তে এখনও ত্রিপুরার ফল পৌছায়নি। তাঁর অভিযোগ, ত্রিপুরা সরকার এই ব্যাপারে সম্পুর্ন উদাসীন। তাই তিনি পরামর্শ দেন, ফলচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পাইকারী ব্যবসায়ীদের ত্রিপুরায় আনার পথ সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে। একই সাথে ফল চাষী-দের আর্থিক দিক সহায়তায় প্রয়োজনে ন্যুনতম সহায়ক মূল্যে ফল ক্রয় করে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করুক ত্রিপুরা সরকার। শুধু তাই নয়, ফল চাষী-দের বাজারে পৌছানোর ব্যবস্থা করা হোক, দাবি তুলেন তিনি। এ-ক্ষেত্রে অতি দ্রুততার সাথে ফল ব্যবসায়ীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।