আগরতলা, ৫ মে (হি. স.) পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনোত্তর লাগামহীন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে সারা ত্রিপুরায় সমস্ত মন্ডলে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি কার্যকর্তারা৷ জি বি বাজারে আগরতলা মণ্ডলের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে নেতৃত্ব দিয়ে সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক বলেন, অমানবিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গোটা দেশ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কার্যকর্তাদের পাশে রয়েছে৷ সন্ত্রাস বন্ধ না হলে ত্রিপুরায় বিক্ষোভ কর্মসূচি লাগাতর জারি থাকবে৷
এদিন প্রতিমা ভৌমিক বলেন, ২ মে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলর জয়ের সাথে সাথে বিজেপি কার্যকর্তাদের উপর ক্রমাগত সন্ত্রাস চলছে৷ খুন, বাড়িঘরে ভাংচুরর ঘটনায় গণতন্ত্র কলঙ্কিত হয়েছে৷ তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার পর এই প্রথম মা-বোনেরা ইজ্জত রক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র অসমে আশ্রয় নিয়েছেন৷ তাঁর মতে, নিজ দেশে নাগরিকদের প্রাণভয়ে অন্যত্র ছুটে যাওয়া বেনজির ঘটনা৷ তা কোনভাবেই গণতন্ত্রে কাম্য নয়৷
তিনি তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, আজ কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের সোনার বাংলা ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে৷ তাই, গোটা দেশ প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে৷ তিনি শপথ করে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ আন্দোলন থামবে না৷
এদিকে, ‘এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার’ কবির ভাষায় পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনোত্তর বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বুঝানোর চেষ্টা করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসের বলি বিজেপি কার্যকার্তাদের আত্মার শান্তি কামনায় পাঁচটি মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন তিনি৷
ফেইসবুক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ভোট গণনার পর থেকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যে পৈশাচিক সন্ত্রাস শুরু করেছে, তা অবর্ণনীয়৷ ইতিমধ্যেই অনেক বিজেপি কার্যকর্তাকে খুন হতে হয়েছে৷ বাড়িতে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির বুথ সভাপতিকে না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধা মাকে খুন করতেও রেয়াত করেনি দুষৃকতীরা৷ এই কয়েকদিনে যে বিজেপি কার্যকর্তা ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা তৃণমূলের হামলায় শহীদ হয়েছেন তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি৷
তাঁর কথায়, পশ্চিমবাংলায় জঙ্গলের রাজত্ব কায়েম হয়েছে৷ বাড়িঘর লুঠ, মহিলাদের সম্ভ্রম হানি থেকে শুরু করে দুধের শিশুর উপরেও হামলা হচ্ছে৷ অন্যদিকে প্রশাসন নির্বিকার৷ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না আবার প্রশাসনকেও নিষ্ক্রিয় করে রেখেছেন৷ এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বিজেপি কার্যকর্তা ও মানুষের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করছি৷ তাঁদের পাশে মানসিক ভাবে রয়েছি৷ অবিলম্বে এই জঙ্গলের রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে বাংলার প্রশাসনকে৷
আজ সারা ত্রিপুরায় বিজেপি কার্যকর্তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন৷ তাতে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি ডা: মানিক সাহা সহ সমস্ত নেতা ও কার্যকর্তা-রা সামিল হয়েছেন৷