আগরতলা, ২৭ এপ্রিল (হি. স.)৷৷ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় করোনার সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে বেড়েছে৷ তাই, করোনার টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে জেলা প্রশাসন৷ ফলে, আজ থেকেই সমস্ত টিকাকরণ কেন্দ্রে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ এন্টিজেন পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তবেই দেওয়া হবে টিকা৷
এবিষয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সংগীতা চক্রবর্তী বলেন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসকের আদেশের ফলে টিকাকরণের পূর্বে এন্টিজেন টেস্ট করা বাধ্যতামূলক হয়েছে৷ এবিষয়ে তাঁর যুক্তি, সারা রাজ্যের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি৷ তাই, সকলের নমুনা পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে৷
তাঁর কথায়, টিকাকরণের সমস্ত কেন্দ্রে এখন করোনার নমুনা পরীক্ষা চলছে৷ তবে, আইজিএম হাসপাতালে এখনও তা শুরু করা সম্ভব হয়নি৷ কারণ, এন্টিজেন কিটের ঘাটতি রয়েছে৷ পর্যাপ্ত কিট এসে গেলেই আইজিএম হাসপাতালেও করোনার নমুনা পরীক্ষা করে নেগেটিব আসলে তবেই দেওয়া হবে টিকা৷
সাথে তিনি যোগ করেন, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে গিয়ে এন্টিজেন টেস্টে রিপোর্ট পজিটিভ আসলে ওই ব্যক্তি গাইডলাইন মেনে বাড়িতে আইসোলেশনএ যাবেন৷ রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ার পর তাকে টিকা দেওয়া হবে৷ পশ্চিমা ত্রিপুরা জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে মানুষ স্বাগত জানিয়েছেন৷ টিকা নিতে এসে জনৈক ব্যক্তি বলেন, নিশ্চই চিকিতা বিজ্ঞানের ভাষায় এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ তাই, টিকা দেওয়ার আগে এন্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে৷
ত্রিপুরায় বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা৷ গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১১ জন৷ দ্বিতীয় ঢেউ-এ এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ৷ শুধু তাই নয়, গত ২৪ ঘন্টায় ২ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে৷ পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে গত বছরের থেকেও ভয়ানক পরিস্থিতি-র দিকে এগিয়ে চলেছে৷ কারণ, এ-বছর অতিমারির প্রভাব অনেক আগেই আছড়ে পড়েছে৷ গত বছর এমন সময়ে করোনা-র প্রভাব তেমনভাবে ত্রিপুরায় দেখা দেয়নি৷ তবে, গত ২৪ ঘন্টায় ৩৫ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়েছেন৷ তাতে, বর্তমানে ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৭৯৩৷
স্বাস্থ্য দফতরের মিডিয়া বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘন্টায় আরটি-পিসিআর ৮০৭ এবং রেপিড এন্টিজেন-র মাধ্যমে ৩৫৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাতে, আরটি-পিসিআর ১৮ জন এবং রেপিড এন্টিজেন-এ ৯৩ জনের দেহে করোনা-র সংক্রমণ মিলেছে৷ সব মিলিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় মোট ১১১ জন নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে৷
তবে, সামান্য স্বস্তির খবর-ও রয়েছে৷ গত ২৪ ঘন্টায় ৩৫ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়েছে৷ কিন্ত, ২ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু-র ঘটনা যথেষ্ট চিন্তাজনক বলেই মনে করা হচ্ছে৷ তাতে, বর্তমানে করোনা আক্রান্ত সক্রিয় রোগী রয়েছেন ৭১৯ জন৷ প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৩৪৭৩৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ৩৩৪৯২ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থ হয়েছেন৷ বর্তমানে ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্তের হার ৫.০৩ শতাংশ৷ তেমনি, সুস্থতার হার ৯৬.৫৭ শতাংশ৷ এদিকে মৃতের হার ১.১৩ শতাংশ৷
স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে খবর, আবারও পশ্চিম জেলায় সংক্রমণ-এ শীর্ষে রয়েছে৷ নতুন করে পশ্চিম জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ৮১ জন, দক্ষিন জেলায় ৯ জন, গোমতি জেলায় ৩ জন, ধলাই জেলায় ৪ জন, সিপাহীজলা জেলায় ৪ জন, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১ জন, উনোকোটি জেলায় ৩ জন এবং খোয়াই জেলায় ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন৷