মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলাততন্ত্র

অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ২৭ এপ্রিল (হি. স.) :  ২০১৬-র নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের নেপথ্যনায়করা এভাবে ছড়িয়ে পড়েন প্রশাসনের নানা ক্ষেত্রে।
১৯৮৯-এর আইএএস অজিত বর্দ্ধন যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দফতরের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি ডিভিশনের কমিশনারের দায়িত্ব পান। ২০১৯-এর ২৮ মে জনস্বাস্থ্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। ১৯৮৬-র আইএএস আর এস শুক্লা গত ১৭ এপ্রিল সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের সচিবের দায়িত্ব নেন।

১৯৮৫ সালের ব্যাচের আইএএস অফিসার মলয় দে ২০১৭ সালে রাজ্যের মুখ্যসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৯-এর ৩০ সেপ্টেম্বর অবসর নেন তিনি। তার আগে পরবর্তী মুখ্যসচিবের নাম ঘোষণা করল নবান্ন। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকেই পরবর্তী মুখ্যসচিব হিসেবে বেছে নেয় রাজ্য সরকার। তিনি ছিলেন স্বাস্থ্যসচিবের দায়িত্বে।

’১৯-এর ২৭ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইটে বলেন, ‘আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আমাদের বর্তমান মুখ্যসচিব মলয় দে অবসর নিতে চলেছেন। রাজ্যের জন্য তিনি অসামান্য কাজ করেছেন। অবসর জীবনের জন্য আমার তরফে তাঁর শুভেচ্ছা রইল।’

রাজীব সিনহা মুখ্যসচিব ছিলেন বছরখানেক। তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ভাল সমঝোতা ছিল। প্রথামাফিক মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস, আমফানের মতো বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তাঁর প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অবসরের পর শিল্প দফতরের একটি পদ উপহার পান তিনি।

নয়া স্বরাষ্ট্রসচিব কে হবেন, তা নিয়েও আমলা মহলে গুঞ্জন চলছিল। দৌড়ে ছিলেন কৃষিসচিব সুনীল গুপ্ত, অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের সচিব মনোজ পন্থের নামও উঠে আসছিল। বিশেষত গত লোকসভা নির্বাচনের আগে স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ায় রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্ক থাকবে বলে প্রশাসনিক মহলের অনুমান ছিল। তাই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দায়িত্ব সামলানো সুনীল গুপ্তকে মুখ্যসচিবের পদে বসানো হতে পারে জল্পনা ছড়িয়েছিল।

শেষপর্যন্ত গত ১ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের নতুন মুখ্যসচিব পদে নিয়োজিত হন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এর ক’দিন আগে ট্যুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এই কথা জানান।  নবান্নের তরফে এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান মুখ্যসচিব রাজীবা সিনহা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অবসর নিচ্ছেন এবং তাঁর জায়গায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের দায়িত্ব যায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আগে পরিবহন, শিল্পের মতো দফতর সামলানোর পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং সরকারকে বহু বার নানা সমস্যা থেকে বার করে আনার সুবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সুনজরে ছিলেন।
২০২১-এর মে মাস পর্যন্ত মুখ্যসচিব পদে থাকবেন ১৯৮৭-র ব্যাচের আইএএস অফিসার আলাপন। রাজ্যে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদে কর্মরত আমলাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সিনিয়র। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় রাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে নিয়োগ করা হল হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। এর আগে তিনি অর্থ দফতরের সচিব ছিলেন।

এর আগেই নিজের অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “আমি এটা জানাতে পেরে খুব আনন্দিত যে বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের নতুন মুখ্যসচিব নিযুক্ত করা হল। বর্তমান অর্থ দফতরের সচিব এইচ কে দ্বিবেদিকে রাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব নিযুক্ত করা হল। অন্যদিকে অর্থ দফতরের সচিবের দায়িত্ব পেলেন মনোজ পন্থ। আগামী ১ অক্টোবর থেকে দায়িত্ব নেবেন তিনজন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *