নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ এপ্রিল৷৷ গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের কাঞ্চনমালা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দারা জলের জন্য হাহাকার করছে৷ এই এলাকার প্রত্যেকের বাড়িতেই জলের টিউবওয়েল রয়েছে৷ কিন্তু জলের লেয়ার অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় তাদের টিউবয়েল থেকে জল বের হচ্ছে না৷ এলাকার এই করুণ পরিণতির পেছনে রয়েছে বিশাল বড় এক রহস্য৷ দীর্ঘ দশ পনের বছর ধরে সেখানকার স্থানীয় সিনাই নদী থেকে বালি মাফিয়ারা অবৈধভাবে মেশিনের সাহায্যে বালির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে৷ যার ফলে নদীর চর সহ আশপাশ এলাকা সম্পূর্ণ মরুভূমির রূপ ধারণ করতে চলেছে৷ আমাদের সংবাদ প্রতিনিধি এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে দেখতে পায় নদীর আশপাশ এলাকায় বিশাল বড় বড় গর্ত হয়ে রয়েছে আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে বিশাল আকারে বালির অনেকগুলো স্তুপ হয়ে রয়েছে যা একেবারে মরুভূমির থেকেও কম নয়৷
এই অবস্থার কারণে এই নদীটি আধা মাইল পর্যন্ত চওড়া হয়ে গেছে৷ অনেক আগে একটি জলের পাম্প হাউস ছিল কিন্তু বালি মাফিয়ারা বালি নিয়ে যাওয়ার ফলে নদী ভাঙ্গনের সময় সেই পাম্পাস ভেঙ্গে পড়ে৷ আর তখন থেকেই সম্পূর্ণভাবে জলের সমস্যায় পড়তে হয়েছে ৫নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দাদের৷ নদীর দক্ষিণ পাশে গিয়ে দেখা গেল অবৈধভাবে কয়েকটি বালি তোলার মেশিন বসানো আছে সেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে রাস্তার পাশের বালি মাফিয়াদের ধারায় পৌঁছে যাচ্ছে নদীর বালি৷ স্থানীয়দের অভিযোগ বিষয়টি কাঞ্চনমালা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রদীপ কুমার মজুমদার কে অনেকবার জানানোর পরেও দেব দিচ্ছি বলে কাটিয়ে যাচ্ছে৷ স্থানীয় এক বাসিন্দা বন দপ্তরের কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানিয়েছেন এসব বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে বন দফতরের কর্মীরা কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করছেন না কেননা বন দফতরের কর্মীরা প্রতিবছর বালি মাফিয়াদের কাছ থেকে ব্যাগভর্তি মোটা অংকের কোটি কোটি টাকার প্রণামী পেয়ে যাচ্ছেন যার ফলে বন দফতরের কর্মীরা চোখে কাপড় বেঁধে বসে রয়েছেন৷
অভিযোগ এই বালি মাফিয়াদের মেশিনের মাধ্যমে বালি তোলার কারণেই এলাকার মানুষ জলের অভাবে ফসল ফলাতে পারছেনা এবং এই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মরুভূমির রূপ ধারণ করতে চলেছে৷ এলাকাবাসীর দাবি খুব শীঘ্রই যেন সরকার এই এলাকাতে পানীয় জলের ব্যবস্থা সহ বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন৷ এখন দেখার বিষয় হল এলাকার সাধারণ মানুষের দাবি সরকারের কাছে কতটুকু পৌঁছায়৷ কাঞ্চনমালা থেকে নিজস্ব প্রতিনিধির রিপোর্ট৷

