কলকাতা, ১৮ মার্চ (হি.স.): বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি তথা মেঘালয় ও ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়ের মন্তব্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তথাগতবাবু বৃহস্পতিবার প্রথমে টুইটে, পরে ফেসবুকে লিখেছেন, “বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলা শাল্লা উপজেলায় হিন্দুদের উপর আবার ভয়াবহ অত্যাচার। প্রণালী একই-প্রথমে নিজেরাই ফেসবুকে নিজেদের নাম অপমানজনক পোস্ট, তারপর তাকে অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করে হিন্দুদের আক্রমণ। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের কি চৈতন্য হবে, কি ভয়াবহ ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য?”
প্রতিক্রিয়ায় টুইটে জনৈক অলোক লিখেছেন, “আপনার লেখা ‘মাই পিপল অপরুটেড’ আমি পড়েছি এবং আপনাকে আমি খুব সম্মান করি কিন্তু আপনি যে দলটির প্রতিনিধি, তাঁরা বাঙালি হিন্দুদের রক্ষা করবে আমি বিশ্বাস করি না।” জবাবে তথাগতবাবু লিখেছেন, “যতক্ষণ না পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি হিন্দুদের নিজেদের বিপদ সম্বন্ধে চৈতন্য হচ্ছে ততক্ষন পাঞ্জাবী রাজস্থানী মারাঠী মালায়ালীদের কী দায় পড়েছে তাদের নিয়ে মাথা ঘামাবার? তবু বিজেপিই তাদের নিয়ে দু-পাঁচটা কথা বলে, বাকিরা তো তাদের ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ উচ্ছ্বাসে ভাসায়!”
ফেসবুকে পোস্ট করার পর প্রথম এক ঘন্টায় লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৪৪৪, ১৮৭, ৩৪। সুব্রত বসু লিখেছেন, “এখানে পালাবদল না করাতে পারলে এই অবস্থাই হবে।“ রাজা দেবনাথ লিখেছেন, “আপনার মতো কিছু মানুষ আছেন, যারা এখনও ইসলামিক বর্বরতার দৃশ্য সবার সামনে তুলে ধরতে সোচ্চার হন। আসল ধর্মের কাজ তো এটাই। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।” তপন বিশ্বাস লিখেছেন, “অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে করা ব্যবস্থা নেওয়া হোক।“ পথের পাঁচালি লিখেছেন, “হয় বিষফোঁড়া কেটে ফেলুন না হয় পালটা মারুন। তবেই না সমানে সমান।” ব্রজকিশোর সাহা লিখেছেন, “স্যার আমরা এই বদলা নিতে তৈরী শুধু আপনাদের আদেশের অপেক্ষায়।“ গৌতম ব্যানার্জি লিখেছেন, “এটা খুব বাজে প্রবণতা যেটা বহুবছর ধরে ঘটে চলেছে। যেহেতু এটা অন্য দেশের বিষয় তাই আমাদের দেশের সরকারের উচিত এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা। আর এখানে আমাদেরও সচেতন হতে হবে।“ সুব্রত কুমার ঘোষ লিখেছেন, “হবে কি করে ? এরা তো গো মাংস খাওয়ার অধিকার আদায়ে ব্যস্ত!”
প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে জয়ন্ত হাওলাদার লিখেছেন, “কাজ হারিয়ে কত ঘর সংসার ভেঙে যাচ্ছে সে সব নিয়ে কিছু বলুন। আমরা ভারতীয়রা খুব বিপদের মধ্যে আছি সে সব নিয়ে কিছু বলুন।“ আবার জয়ন্তবাবুর মন্তব্যের প্রতিবাদ করে একগুচ্ছ মন্তব্য এসেছে। অশোক বৈরাগ্য লিখেছেন, “তুই নির্ঘাত বামপন্থী….।“ কুশল বসু লিখেছেন, “কাজ হারিয়ে তো বাঁচবেন, নির্লজ্জ না হয়ে ওদের কোথাও ভাবুন।“ এসসি শিমূল লিখেছেন, “একেই বলে আত্মবিস্মরণ! হায়রে, বাঙালি হিন্দু অসহায় পক্ষে কথা বললেই কাজ দে ভাত চলে আসে। ৩৪ বছর কি না খেয়ে ছিলে নাকি বেশি খেয়ে ফেলছো? নিরীহ হিন্দুদের ওপর বর্বর আত্যাচার হচ্ছে তার প্রতিবাদ করবে না?“ রঞ্জিত কর লিখেছেন, “আপনাদের মতো মানুষের জন্যেই ইরান, ইরাক, আফগানিস্তানের মতো দেশ হিন্দুশুন্য হয়ে গেছে। নিজের দেশেও ওই লুঙ্গীধারিদের ভয়ে ভয়ে জীবন কাটিয়ে দেবেন। আমাদের দেশে অবৈধভাবে যে লুঙ্গীধারিগুলো বসবাস করছে এদের তাড়ালে অনেক রোজগার আর বাসস্থান চলে আসবে।” বাপান হাজরা লিখেছেন, “ওরে খানকীর ছেলে এই সমস্যাটা আগেই ভেবে দেখ! কি হতে চলেছে!“
কৃষ্ণেন্দু কুন্ডু লিখেছেন, “এরকম দৈন্য দশা না হলে কি আর ওপারের কুমির দেখিয়ে এখানে ভোট চাইছেন !!! তা আপনার প্রভু তো বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছে কিছুদিন পরেই, তাহলে প্রভুকে বলুন না হাসিনার কাছে যেন এই কথাটা পারে !!..তাহলে বুঝব ৫৬ ইঞ্চির দম কত !” কৌশিক ভাদুড়ি লিখেছেন, “দাদু আপনার ঘুম হয়না দেখছি। এটা হিন্দু মুসলিমের সমস্যা নয়, সমস্যা আপনার বিছানায়। তাই বালিশ পরিবর্তন করুন আর ভালো করে ঘুমান।“ এর জবাবে আলোকিত প্রীতম মহাকাল লিখেছেন, “আপনি নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। যার স্বজাতির প্রতি মায়া আছে তিনি তো আহাজারি করবেনই। যেমন হাজার হাজার মাইল দূরে ফিলিস্তিনে বোমা ফাটলে কলকাতায় বামেদের ঘুম হারাম হয়ে যায়।“ রাজ রাজ লিখেছেন, “এখন আগুনটা অন্যর ঘরে লেগেছে, ওই আগুন টা যখন আপনার ঘরে লাগবে তখন বুঝতে পারবেন।”
2021-03-18