নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ মার্চ৷৷ বহু সন্ন্যাসী, দার্শনিক এবং জ্ঞানী ব্যক্তিদের জন্মভূমি এই ভারত৷ আধুনিক মুদ্রণ প্রযুক্তি না আসার অনেক আগে থেকেই বিভিন্নভাবে জ্ঞানের আদানপ্রদান হতো৷ আজকাল অনেক ক্ষেত্রে বিতর্ক হয় যে বৈদ্যতিন ও সামাজিক মাধ্যমের কারণে প্রিন্ট মিডিয়া ও বই হারিয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু মানুষ এখনও মুদ্রিত বই পড়তে ভালবাসেন ও নিজের সংগ্রহে রাখতে পছন্দ করেন৷
হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত ৩৯ তম আগরতলা বইমেলার সমাপ্তি দিনে আজ সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন রাজ্যাপাল রমেশ বৈস৷ তিনি বলেন, ১৯৮১ সাল থেকে আগরতলায় প্রতিবছর লাগাতর বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে৷ বর্তমানে যার পরিধি অনেক বিস্তার লাভ করেছে৷ আগরতলা বইমেলা স্থানীয় লেখক ও প্রকাশকদের উৎসাহিত করছে৷ সম্মানিত অতিথির ভাষণে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা কোভিড পরিস্থিতিতে বইমেলা আয়োজনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, সকলের সহযোগিতায় আগামী বছরও আগরতলা বইমেলা আরও সুুন্দরভাবে আয়োজন করা সম্ভব হবে৷
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেবয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল ১৪ দিনব্যাপী এই বইমেলা৷ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মিমি মজমদার, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা দেব সরকার, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা, ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ডের সম্পাদক শুভবত দেব, দি অল ত্রিপুরা বুক সেলার্স এণ্ড পাবলিশার্স এসোসিয়েশনের সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী এবং পাবলিশার্স এণ্ড বুক সেলার্স এসোসিয়েশনের সম্পাদক রাখাল মজমদার৷ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ত্রিপুরা স্টেট এডুকেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. অরুনোদয় সাহা৷ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য অতিথিগণও বক্তব্য রাখেন৷ এদিকে, ৩৯ তম আগরতলা বইমেলা উপললক্ষ্য এবার মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মাণিক্য বাহাদুর স্মৃতি পুরস্কার -২০২১ পেয়েছেন রঙ্গমোহন রায়৷ তাছাড়া অটল বিহারী বাজপেয়ী ম’তি পুরস্কার-২০২১ পেয়েছেন নরেশ চন্দ্র দেববর্র্ম৷
আজ হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে ৩৯ তম আগরতলা বইমেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যপাল রমেশ বৈস৷ এবার পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জাতীয় সংহতি পুরস্কার পেয়েছেন জয়শ্রী শর্মা৷ তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ তাছাড়াও আজ ৩৯ তম আগরতলা বইমেলা উপলক্ষ্যে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় মঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাপ্তি অনুষ্ঠানে শচীন দেববর্মণ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপক অনিরুদ্ধ দেববর্মা, ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ দেববর্মণ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপক হরেকৃষ্ণ পাল, সলিলকৃষ্ণ দেববর্মণ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপক অশোক দেব, কালীকিংকর দেববর্মণ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপক শিউলি দেববর্মা, ত্রিপুরেশ মজমদার স্মৃতি পুরস্কার প্রাপক স্বর্গীয় তরুণ ভট্টাচার্য (মরণোত্তর), ভীমদেব ভট্টাচার্য স্মৃতি পুরস্কার প্রাপক ডা. বিজয় দেববর্মা, লালন পুরস্কার পুরস্কার প্রাপক মনীন্দ্র দেবনাথের হাতে অতিথিগণ পুরস্কার তুলে দেন৷ প্রয়াত তরুণ ভট্টাচার্যের হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর সহধর্মিনী৷
এবছর বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ প্রকাশনার জন্য রাধামোহন ঠাকুর স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছে নীহারিকা (কিশোর সাহিত্য সমাজ ইতিহাস ও পটভূমি), ককবরকে শ্রেষ্ঠ প্রকাশনার জন্য দৌলত আহমেদ ম’তি পুরস্কার পেয়েছে ককবরক তেই হুকুমু মিশন(রাংচাকনি সান্দাই) এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষায় অনুবাদ গীতাঞ্জলি গ্রন্থটির জন্য শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা পুরস্কার-২০২১ পেয়েছে নীহারিকা৷ আজ সমাপ্তি অনুষ্ঠানে চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ গ্রহণকারী চিত্র সাংবাদিকদের তথ্য সংস্ক’তি দপ্তরের পক্ষ থেকে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়৷ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজ্যপাল রমেশ বৈস, সম্মানিত অতিথি উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা সহ অন্যান্য অতিথিগণ চিত্র সাংবাদিকদের সম্মাননা জ্ঞাপন করেন৷