গুয়াহাটি, ২ মার্চ (হি.স.) : আজ ২ মাৰ্চ প্ৰথম দফা, ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত নিৰ্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেছে। প্রথম দফার নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদান করতে নতুন যে তিনটি শ্ৰেণিকে সুবিধা দিতে ভারতের নিৰ্বাচন কমিশন নিৰ্দেশ জারি করেছে তার বিবরণ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক (সিইও) নীতিন খাড়ে। সোমবার বেলা দুটো পঁয়তাল্লিশ মিনিটে জনতা ভবনে সিএম ব্লকের কনফারেন্স হল-এ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সিইও জানান, কোভিড-১৯ সংক্রমণের আবহে আগামী ২৭ মার্চ, ১ এবং ৬ এপ্রিল অসম বিধানসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক দিনক্ষণ ঘোষণা করেছেন মুখ্য নিৰ্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। এই পরিস্থিতিতে ঘোষিত নির্বাচনি কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
সে সব বিধিনিষেধ সম্পর্কে আজ কোনও তথ্য দেননি তিনি। কেবল পোস্টাল ভোট সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক নীতিন খাড়ে জানান, সিইসি-র নির্দেশিকায় এবার যে তিনটি শ্রেণিকে নিৰ্দিষ্ট করে বিধান দেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী ৮০ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তি, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা সন্দেহজনক রোগী এবং দিব্যাঙ্গ তথা শারীরিক প্রতিবন্ধীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। তিনি বলেন, এই পরিষেবা পেতে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির তারিখ অর্থাৎ আজ থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে স্ব স্ব বিধানসভা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে আবেদন করতে হবে।
বিস্তারিত জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, পোস্টাল ভোটারদের ফর্ম ১২ (ডি) পূরণ করে নিজের নিজের এলাকার বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-এর হাতে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট ভোটার কী কারণে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে চাচ্ছেন তার প্রমাণপত্র বা নির্দেশিকা ১২ (ডি) ফর্মের সঙ্গে জুড়ে দিতে হবে। তৃতীয়ত, ভোটার যদি দিব্যাঙ্গ হন, তা-হলে তিনি তাঁর আবেদনপত্রের সঙ্গে শারীরিক প্রতিবন্ধী অধিকার আইন-২০১৬-এর অধীনে সংশ্লিষ্ট সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দিব্যাঙ্গ প্রমাণপত্র (সার্টিফিকেট) দেবেন। চতুর্থত, কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা সন্দেহজনক রোগীদের পোস্টাল ব্যালটের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে সরকারি ডাক্তারের সার্টিফিকেট দিতে হবে। রিটার্নিং অফিসার যদি এই সার্টিফিকেট বা আবেদনপত্রে সন্তুষ্ট হন তা-হলে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী এই সুবিধা পাবেন।
সিইও নীতিন খাড়ে আরও জানান, রাজ্যের সকল জেলা নির্বাচনি আধিকারিক (জেলাশাসক) এই শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত নতুন ভোটারদের জন্য কয়েকটি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এগুলি প্রথমত, পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা যাঁরা নিতে চান তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফৰ্ম বিতরণের পাশাপাশি সেগুলো গ্রহণ করবেন বুথ লেভেল অফিসাররা। দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট ভোটার যদি কোনও কারণে ঘরে না থাকেন, তা-হলে তাঁর অনুপস্থিতিতে বুথ লেভেল অফিসাররা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিজ্ঞপ্তি জারির পাঁচদিনের মধ্যে পুনরায় বিএলও তাঁর বাড়িতে গিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করবেন। তবে কোভিড-আক্রান্ত বা সন্দেহজনকদের বাড়িতে যাঁরা যাবেন (বিএলও) তাঁদের পিপিই কিট সরবরাহ করা হবে।
এককথায় আজ থেকে আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে নতুন শ্রেণির পোস্টাল ভোটারদের। এর পর সংশ্লিষ্ট জেলার রিটার্নিং অফিসার আবেদনকারীর তথ্যাবলি ভোটার তালিকার সঙ্গে যাচাই করবেন। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তা-হলে এই সুবিধা পাবেন আবেদনকারী। তিনি বলেন, পোস্টাল ব্যালট-প্রাপকরা যাতে বুথে গিয়ে ভোট দিতে না পারেন সে বিষয়ে নিশ্চিত করবেন রিটার্নিং অফিসার। এই প্ৰক্ৰিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা থাকবে।
খাড়ে বলেন, আগে কেবল সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর লোকজনের জন্য এই সুবিধা ছিল। এবার কোভিড-এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ পর্যন্ত যা হিসাব, সে অনুযায়ী গোটা রাজ্যে ৮০ বছরের বেশি বয়সি লোক রয়েছেন এক লক্ষ ৯০ হাজার ২৩৮ জন। এছাড়া দিব্যাঙ্গদের সংখ্যা এক লক্ষ ৩৩ হাজার ৭৮৯ এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত রয়েছেন ২৮৯ জন।
আজকের সাংবাদিক সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দিব্যাঙ্গদের মধ্যে ভোট সংক্রান্ত প্রচার তথা সচেনতা গড়র জন্য মনোনীত আইকন রাকেশ বণিককে সংবর্ধনা জানিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক নীতিন খাড়ে।